
শিলিগুড়ি: হরিয়ানা, পঞ্জাব ও উত্তর প্রদেশ থেকে দল বেঁধে তারা ঢুকছে বাংলায়। প্রত্যেকের ঘাড়ে বিভিন্ন দায়িত্ব। কেউ করবে জরিপ, কেউ মাপবে সময়, কেউ আবার ‘দক্ষতার’ সঙ্গে ব্যবহার করবে ওয়েল্ডিং মেশিন। কিন্তু এরা দল বেঁধে করেই বা কী?
উত্তরবঙ্গে পর পর ATM লুঠ। আর সেই দুষ্কৃতী তাণ্ডবের নেপথ্য হাত নাকি এই ভিনরাজ্যের অপরাধীদের। এমনটাই জানা গিয়েছে পুলিশি সূত্রে।
প্রথমে ৮ই মার্চ রায়গঞ্জ। তারপর ১৩ই জুন ময়নাগুড়ি ও সবশেষে গতরাতে শিলিগুড়ি। এই নিয়ে উত্তরবঙ্গের তিন নামী এলাকায় লুঠপাট চালাল দুষ্কৃতীরা। বুধবার রাতে শিলিগুড়ির প্রধান নগর থানার চম্পাশাড়ি মোড় এলাকায় একটি SBI-এর এটিএম লুঠ করে দুষ্কৃতীরা। ঠিক কত টাকা চুরি হয়েছে, সেই নিয়ে এখনও কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি পুলিশ তরফে।
তবে স্থানীয় এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমনকি, জলপাইগুড়ি ও উত্তর দিনাজপুর জেলার প্রতিটি থানাকে খবর দেওয়া হয়েছে। এমনকি, বাড়তি সতর্কতার আর্জি জানানো হয়েছে প্রশাসন তরফে।
এদিন শিলিগুড়ির ঘটনায় এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, ‘আমার এখানে বাড়ি। মেয়ের পরীক্ষা চলছে। ও রাত জেগে পড়াশোনা করে দেখে। হঠাৎ করে দেখে একটা গাড়ি এসে থামল এটিএম-র সামনে। তখনই ১০০ নম্বর ডায়াল করে।’
উল্লেখ্য, এর আগে একই ভাবে লুঠ চলেছিল রায়গঞ্জ ও ময়নাগুড়িতে। রায়গঞ্জের এটিএম লুঠ করে মোট ৩৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। একইভাবে ময়নাগুড়িতে ৮ মিনিটের মাথায় জোড়া এটিএম লুঠ করে মোট ৫৪ লক্ষ টাকা চুরি করে ভিনরাজ্যের দুষ্কৃতীরা।
পুলিশ তদন্ত চালিয়ে ময়নাগুড়ির দুষ্কৃতীদের পাকড়াও করলেও কয়েক মাস পেরিয়েও অধরা রায়গঞ্জের এটিএম লুঠে জড়িত দুষ্কৃতীরা। এবার সেই তালিকায় আপাতত জুড়ে গেল শিলিগুড়ির নাম।
ময়নাগুড়ি-কাণ্ডে স্থানীয় একটি জঙ্গলে নাইট ভিশন ড্রোন নিয়ে হানা দিয়ে চার দুষ্কৃতীকে পাকড়াও করেছিল পুলিশ। যাদের কাছ থেকে পরবর্তীতে মোট ১৬ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, এই ধৃতরা কিন্তু প্রত্যেকেই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত। ওয়েল্ডিং মেশিন দিয়ে এটিএম কাটা, জালিয়াতি, সমস্ত রকমের কুকর্মে পারদর্শী তারা। সেদিন ৮ মিনিটের মাথায় পর পর দু’টি ATM ভেঙেছিল তারা। এমনকি, লুঠের পর গা ঢাকা দিতে নিজেদের গাড়ির নম্বর প্লেটও দিনের দিন বদলে দিয়েছিল তারা।