AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Bankura: বাংলার ভিতরে এক টুকরো আফ্রিকা! আজও এভাবে পানীয় জল সংগ্রহ করে ওরা

Bankura: পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে তৃণমূল পরিচালিত বাঁকুড়া জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ চিত্ত মাহাতোর সাফাই, ওই গ্রামে পানীয় জলের সঙ্কট নেই। তবে নলকূপের জল রান্নার অনুপযুক্ত হওয়ায় রান্নার জন্য নদী থেকে গ্রামবাসীরা জল সংগ্রহ করেন।

Bankura: বাংলার ভিতরে এক টুকরো আফ্রিকা! আজও এভাবে পানীয় জল সংগ্রহ করে ওরা
নদীর ধারে গর্ত থেকে জল সংগ্রহ করেন স্থানীয় বাসিন্দারাImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 19, 2025 | 11:03 AM

বাঁকুড়া: গ্রামে পৌঁছায়নি নলবাহিত পানীয় জল। একমাত্র নলকূপের জল পানের অযোগ্য। অগত্যা পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে গ্রামের মানুষের সম্বল নদী। নদীর ধারে ছোট ছোট গর্তে জমা জলই পান করতে হয় গ্রামবাসীদের। এই ছবি আফ্রিকার কোনও গ্রামের নয়। এই ছবি বাঁকুড়া জেলার আমডাঙা গ্রামের।

বাঁকুড়া জেলার গ্রামে গ্রামে জল পৌঁছানোর জন্য কয়েকশো কোটি টাকার জল প্রকল্প রূপায়িত হয়েছে। কিন্তু সেই প্রকল্পের সুবিধা এখনো পায়নি বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ব্লকের পাহাড় আর জঙ্গলঘেরা আমডাঙা গ্রাম। গ্রামের একমাত্র নলকূপের জলও পানের অযোগ্য। তাই সারা বছর পানীয় জল সংগ্রহের জন্য গ্রামের মানুষকে নির্ভর করতে হয় নদীর ধারে ছোট ছোট গর্তে জমে থাকা জলের উপরেই। গ্রাম থেকে পাহাড়-জঙ্গলের প্রায় এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সেই জল সংগ্রহ করতে হয় তাঁদের।

নদীর ধারে গর্ত থেকে জল সংগ্রহ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা

একসময় জঙ্গলমহলে অনুন্নয়নের প্রশ্নে সরব ছিল বিরোধী তৃণমূল। রাজ্যে পালাবদলের পর সেই তৃণমূল বলতে শুরু করে, জঙ্গলমহলে বইছে উন্নয়নের জোয়ার। কিন্তু প্রচারের ঢাক ঢাক গুড় গুড়ের মাঝে রাজ্যের জঙ্গলমহল যে আজও সেই তিমিরেই রয়ে গেছে, তার অন্যতম উদাহরণ রানিবাঁধ ব্লকের আমডাঙা গ্রাম। পাহাড় আর জঙ্গলে ঘেরা রাজ্যের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র সুতানের অদূরেই এই গ্রামের অবস্থান। সবমিলিয়ে বসবাস ১০ থেকে ১২টি পরিবারের। বিরোধীদের অভিযোগ, খাদ্য, পোশাক, বাসস্থান- উন্নয়নের এই তিন উপাদান তো দূর অস্ত, বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা থেকেও বঞ্চিত এই গ্রামের মানুষ। গ্রামে নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছানোর কথা থাকলেও আজও তা পৌঁছায়নি। গ্রামে একটি নলকূপ থাকলেও সেই নলকূপের জল পানের অযোগ্য। সেই জল দিয়ে রান্নাবান্নাও হয় না। অগত্যা পরিবারের পানীয় ও রান্নার জল সংগ্রহ করতে গ্রামের মানুষের ভরসা গ্রাম থেকে দূরবর্তী নদীর জল। নদীর ধারে ছোট ছোট গর্তে চুঁইয়ে যে জল জমে, তাই সংগ্রহ করে বছরের পর বছর ধরে নিজেদের পরিবারের পানীয় জলের চাহিদা পূরণ করে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গ্রামের বাসিন্দা সীতারানি সর্দার ও ঠাকুরমণি হাঁসদারা বলেন, নদীর ধারে ছোট ছোট গর্ত খোঁড়েন তাঁরা। সেই গর্তে জমা জল সংগ্রহ করেন। সেই জল দিয়েই রান্না হয়। এই জলই পান করেন তিনি। তবে এই জল খেয়ে তাঁদের শরীর খারাপ হয় না বলে জানান তাঁরা।

নলকূপ থাকলেও তার জল পান করা যায় না বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য

গ্রামের মানুষের এমন দুর্দশার কথা পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ জানে না এমন নয়। রাওতড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য নকুলচন্দ্র সর্দারের দাবি, বারবার বিষয়টি পঞ্চায়েত ও ব্লক স্তরে জানিয়েও সুরাহা হয়নি। আর এখানেই প্রশ্ন তুলছে বিরোধী বিজেপি। বাঁকুড়া জেলা বিজেপির সম্পাদক দেবাশিস লায়েক বলেন, জঙ্গলমহল ঠিক কতটা হাসছে, এই ঘটনাই তার অন্যতম উদাহরণ।

জল সংগ্রহ করে ফিরছেন স্থানীয় বাসিন্দারা

পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে তৃণমূল পরিচালিত বাঁকুড়া জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ চিত্ত মাহাতোর সাফাই, ওই গ্রামে পানীয় জলের সঙ্কট নেই। তবে নলকূপের জল রান্নার অনুপযুক্ত হওয়ায় রান্নার জন্য নদী থেকে গ্রামবাসীরা জল সংগ্রহ করেন। খুব শীঘ্রই গ্রামে নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছে যাবে বলেও তাঁর আশ্বাস।