বীরভূম: অনুব্রত-কাজলের গড়ে বীরভূমে সমবায় ভোটে ধাক্কা তৃণমূলের। নলহাটির কয়থা সমবায় নির্বাচনে হার শাসকদলের। বাজিমাত বাম-কংগ্রেস জোটের। সমবায়ে ৩৭ টি আসনের মধ্যে ২০ টি আসনে জয়ী জোট। তৃণমূূল সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ী ১৭টি আসনে। পঞ্চায়েত ভোটে নলহাটিতে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিলেন তৃণমূলের। লোকসভা নির্বাচনেও কাজল শেখের নেতৃত্বে ব্লকে লিড পেয়েছিল শাসকদল। কিন্তু সমবায় সমিতিতে ধাক্কা।
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সঞ্জীব বর্মন বলেন, “১২ বছর পর কয়থা সমবায় সমিতিতে নির্বাচন হল। আর সেখানে এভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে তৃণমূল। আমরা বাম-কংগ্রেসের জোটের পক্ষে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করি। তৃণমূল গোটা রাজ্যে দুর্নীতি করছে, তেমনি সমবায়েও করছে। এটা সমবায়কে আমরা দুর্নীতি মুক্ত করতে চাই।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “মানুষ যদি নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন, তাহলে গোটা রাজ্যে এটাই ঘটবে। আর সেকারণেই তৃণমূল সন্ত্রাস তৈরি করে ভোট দিতে দেয় না।”
কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, পরিষ্কারভাবে ভোট যেখানে হবে, সেখানে বাম কংগ্রেসের জোট জিতবে। কারণ বিজেপি আর তৃণমূলের সেটিংটা মানুষ বুঝে গিয়েছে।
নলহাটি ১ নম্বর ব্লকের কয়থা সমবায় সমিতির নির্বাচন ছিল রবিবার। ৩৭ আসন বিশিষ্ট সমবায় সমিতিতে ভোটার সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৫৮০ জন। নির্বাচনে জয়ী বাম সমর্থিত প্রার্থী রেজিনা বিবি, অর্চনা মণ্ডল। তাঁদের বক্তব্য, সমবায়ের জমি কেনা নিয়ে তো কম বিতর্ক হয়নি। আদালতে মামলাও হয়েছে। মানুষ শাসকদলের উপর ভরসা রাখেনি।
প্রসঙ্গত, বীরভূম, যে গড় মূলত একটা সময়ে অনুব্রতর ছিল, তা ধীরে ধীরে এখন অনুব্রত-কাজলের ‘যুগলবন্দি’ গড়ে পরিণত হয়েছে। কারণ অনুব্রত জেলে যাওয়ার পর থেকেই তৃণমূল অন্দরে কেষ্ট ‘প্রতিপক্ষ’ হিসাবে পরিচত কাজল শেখই নিজের জমি পোক্ত করেছে। নানুর থেকে বেরিয়ে গোটা বীরভূমেই নিজের প্রভাব বিস্তার করেছেন কাজল শেখ। তাই সমান্তরাল বিভাজন থাকলেও অনুব্রত-কাজলের গড়ই এখন বীরভূম! দু’জনেরই সমান্তরাল সাংগঠনিক দক্ষতা। আর সেই পরিস্থিতিতেও সমবায় নির্বাচনে তৃণমূল ধাক্কা খেল। এ বিষয়ে তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য তথা বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেন এমন ফলাফল হল, দলগতভাবে তা পর্যালোচনা করা হবে। ”