শান্তিনিকেতন: ২০১৯ সালের পর ফের আগের চেহারায় ফিরছে ঐতিহ্যবাহী ‘পৌষমেলা’। আবারও আগের মতো পূর্বপল্লীর মাঠে ফিরছে একদা বন্ধ হয়ে যাওয়া সেই মেলা। ম্যারাথন বৈঠক করে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। মেলার জন্য আগের মতো রাজ্য সরকারের সহযোগিতা চাওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
বৈঠক শেষে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ জানিয়েছেন, এবার পৌষমেলার আয়োজন করছে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করবে। ২০১৯ সালের পর ২০২৪ সালে এই মেলার ট্রাস্ট ডিড অনুযায়ী হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আগের মতো রাজ্য সরকারের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা চাওয়া হবে, সেই মর্মে চিঠি দেওয়া হবে।
২০২৩ সালে রাজ্য সরকারকে মেলার আয়োজন করতে দিয়েছিল বিশ্বভারতী ও মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট, যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের ডিডে উল্লেখ করা আছে প্রতি বছর ৭ পৌষ একটি মেলার আয়োজন করবে ট্রাস্ট, আর তাতে সবরকম সহযোগিতা করবে বিশ্বভারতী। সেই মতো প্রথা অনুযায়ী পৌষ উৎসব ও পৌষমেলা চলে আসছে। প্রথমে পুরনো মেলার মাঠে হত এই মেলা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেলার পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্বপল্লীর মাঠে এই মেলার আয়োজন করা হয়।
২০১৯ সালে শেষবার পূর্বপল্লীর মাঠে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা করেছিল শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তার পরের বছর, অর্থাৎ ২০২০ সালে কোভিড পরিস্থিতির জন্য বন্ধ রাখা হয় মেলা। এরপর ২০২১ ও ২০২২ সালে তৎকালীন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নানা মন্তব্য ও সিদ্ধান্ত ঘিরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাত শুরু হয় বিশ্বভারতীর। এই সংঘাতের জন্য পৌষমেলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন উপাচার্য। ওই দু’বছর বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে অন্য একটি মেলার আয়োজন করেছিল রাজ্য সরকার।
২০২৩ সালে পৌষমেলা করার জন্য পূর্বপল্লীর মাঠ রাজ্য সরকারকে দিয়েছিল শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত মেলার আয়োজন করতে মাঠ রাজ্য সরকারকে দেওয়া হল? এই নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয় কুমার মল্লিকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছিল।