
বোলপুর: পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার সমর্থনযোগ্য নয়। বাংলা ভাষার গুরুত্ব বুঝিয়ে একথাই বললেন নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তাঁর কথায়, শুধুমাত্র বাঙালি নয়, দেশের যে কোনও প্রান্তের মানুষ অন্য জায়গায় গিয়ে অত্যাচারিত হলে, তা সমর্থনযোগ্য নয়। কর্মসূত্রে বিদেশেই থাকেন অমর্ত্য সেন। সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার বীরভূমে নিজের বাড়ি ‘প্রতীচী’তে ফিরেছেন তিনি। সেখানেই পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে কথা বললেন।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অমর্ত্য সেন বলেন, “শুধু বাঙালি নয়, দেশের যে কোনও প্রান্তের মানুষ যদি অন্য কোথাও হেনস্থার শিকার হন, তা কখনও সমর্থনযোগ্য নয়।“ তিনি আরও বলেন, “বাঙালিদের উপর যদি অত্যাচার হয় বা অবহেলা করা হয়, তাতে আমাদের আপত্তি থাকবে। কিন্তু এটা শুধু বাঙালিদের বিষয় নয়। ভারতের যে কোনও নাগরিক যদি অন্য রাজ্যে গিয়ে অবহেলিত হন বা নির্যাতিত হন, আমাদের সেই ঘটনাতেও একই আপত্তি থাকবে।“
সংবিধানকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ভারতের নাগরিকদের গোটা দেশেই অধিকার রয়েছে। কোনও একটি আঞ্চলিক সীমায় তা আটকে নেই। তাই এই ধরনের ঘটনা সমর্থন করেন না তিনি।
এদিন বাংলা ভাষার গুরুত্বও তুলে ধরেন নোবেলজয়ী। তাঁর কথায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম এই ভাষায় মূল্যবান সাহিত্য উপহার দিয়েছেন। সেই ভাষার মর্যাদা অস্বীকার করা যায় না বলেই মন্তব্য করেন তিনি। জাতি-ধর্ম-ভাষা নির্বিশেষে মানবাধিকার রক্ষা এবং ভাষার প্রতি সম্মান প্রদর্শনে এদিন বার্তা দিলেন অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
উল্লেখ্য, বাঙালি শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের ঘটনার প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় যে ভাষা আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন, সেই আন্দোলনের সূচনা তিনি করেছেন এই বীরভূম থেকেই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি হাতে মঙ্গলবার পথ হেঁটেছেন তিনি।