বীরভূম: একসময় অনুব্রত মণ্ডলকে ‘কাকা’ সম্বোধন করতেন অনুপম হাজরা। ঘাসফুলের সঙ্গ-ত্যাগ করার পরও তাঁর ‘কাকা’র সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সাফাই দিতে হয়েছিল অনুপমকে। আজ সেই অনুব্রতর গ্রেফতার-বার্ষিকী পালন করলেন অনুপম হাজরা। সাত সকালে গুড়-বাতাসা হাতে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন বীরভূমের রাস্তায়। পুজোও দিলেন তারাপীঠে। এক বছর আগে এমন রাখি পূর্ণিমার দিনেই বীরভূমের বাড়ি থেকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। ইতিমধ্যেই আসানসোল জেল থেকে তাঁর ঠাঁই হয়েছে তিহাড় জেলে। এই এক বছরে বারবার জামিনের আবেদন জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।
বুধবার সকালে প্রথমে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গুড়-বাতাসা বিলি করতে দেখা যায় অনুপম হাজরাকে। সোজা চলে যান শান্তিনিকেতনের উপাসনা গৃহের সামনে। বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ স্পষ্ট জানিয়ে দেন অনুব্রতর গ্রেফতারির বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যেই এই গুড় বাতাসা বিলি করছেন তিনি। এরপর তাঁর সঙ্গে উপস্থিত বিজেপি নেতা কর্মীরা একে অপরের হাতে রাখি পরিয়ে দেন।
এরপর বিজেপি কর্মীদের নিয়ে তারাপীঠেও যান অনুপম হাজরা। পুজো দিয়ে বেরিয়ে তিনি বলেন, “লোকে বিবাহ-বার্ষিকী সেলিব্রেট করে। আজ কেষ্টর গ্রেফতার-বার্ষিকী সেলিব্রেট করা হচ্ছে।” তাঁর দাবি, একসময় দোর্দণ্ডপ্রতার অনুব্রতর দাপটে বাড়ি থেকে বেরতে ভয় পেতেন বিজেপি কর্মীরা। অনুপম বলেন, “অনুব্রতর গ্রেফতারির দিনটা বিজেপি কর্মীদের জন্য একটা স্বস্তির দিন ছিল। অন্তত তাঁদের বাড়িতে আর বোমা পড়বে না। কিন্তু তারপরও সেটা উদযাপন করার সাহস কারও ছিল না। আজ আমরা উদযাপন করে দেখিয়ে দিলাম যে সব বিজেপি কর্মীরা একজোট রয়েছে।”
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন অনুপম। এর কিছুদিন পর হঠাৎ দেখা যায় অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে হাজির সেই অনুপম। গেরুয়া উত্তরীয় গলায় অনুব্রতর কাঁধে হাত দিয়ে ছবিও তুলেছিলেন তিনি। এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হলে অনুপমের জবাব ছিল, অনুব্রতকে কাকা বলে সম্বোধন করেন তিনি। তাই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। মধ্যাহ্নভোজও সেরেছিলেন তিনি। সেই ঘটনার বছর চারেক পর আজ অনুব্রতর গ্রেফতার-বার্ষিকী পালন করলেন অনুপম।
পরে জেলার বিজেপি কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। অনুপম হাজরা জানান, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার নির্দেশ মেনেই তিনি জেলার পুরনো কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন।