
বীরভূম: নৃশংস, ভয়াবহ, দুঃসাহসিক- কোনও বিশেষণেই যেন মাপা যায় না এই ঘটনাকে। ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার খবর সামনে আসছে সাম্প্রতিক কালে। বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য তাঁরা ভিন রাজ্যে পুলিশি হেনস্থার মুখে পড়ছেন বলে অভিযোগ। তা নিয়ে বঙ্গ রাজনীতি তপ্ত। সংসদে উঠছে ঝড়। কিন্তু এরই মধ্যে ভয়ঙ্কর ঘটনা। মজুরির পাওনা টাকা চেয়ে না পেয়ে থানায় অভিযোগ জানানোয় এবার মুম্বইয়ে বাংলার শ্রমিকের দু’কান কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। কাঠগড়ায় মুম্বইয়ের এক ঠিকাদার সংস্থার ‘শেঠ’।
আক্রান্ত শ্রমিকের বাড়ি বীরভূমের নলহাটিতে। জানা গিয়েছে, ৫-৬ মাস আগে মুম্বইয়ের মালাট এলাকায় একটি বেসরকারি ঠিকাদার সংস্থায় শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলেন বীরভূমের নলহাটি পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের রাজাপুকুর পাড়ার বাসিন্দা রাহুল সিং। তাঁর অভিযোগ, বাড়ি ফিরতে চেয়ে ঠিকাদারের কাছে তাঁর মজুরির পাওনা ২০ হাজার টাকা চেয়েছিলেন তিনি। সেই পাওনা টাকা না মেলায় স্থানীয় থানায় ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান তিনি।
অভিযোগ, থানায় জানানোর জন্য ঠিকাদারের তিন – চারজন লোক তাঁর দু’কান কেটে দেন। যন্ত্রণায় সেখান থেকে কোনওরকমে তিনি পালিয়ে গিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা করান। কিন্তু তাঁর কেটে দেওয়া কান দুটি জোড়া লাগানো সম্ভব হয়নি। সেখানে বেশ কয়েকদিন চিকিৎসা করানোর পর তিনি তাঁর বীরভূমের নলহাটির বাড়িতে ফিরে আসেন। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে থানার দ্বারস্থ হয়েছে। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে।
আক্রান্ত শ্রমিক বলেন, “ভয়ে কোনওমতে পালাই। আধার কার্ড, ভোটার কার্ড যে ব্যাগে ছিল, সব ফেলে পালিয়ে এসেছি। আর মোবাইল তো ওরা আগেই কেড়ে রেখেছিল।” আক্রান্তের মা বলেন, “পাঁচ-ছ’টা ছেলে মিলে আমার ছেলের এই হাল করেছে। আমার হাতে তো টাকা নেই। ছেলেকে দেখে কিছু বুঝতেই পারছি না, কী করব ওর!”