বীরভূম: বাড়িতে তখন তুমুল অশান্তি। বাবা-ছেলে মিলে তারস্বরে চিৎকার করছেন। সেই চিৎকারে এক কথায় অতিষ্ঠ প্রতিবেশীরা। শেষে আর সহ্য করতে না পেরে কার্যত অশ্রাব্য ভাষায় প্রতিবাদ করেন প্রতিবেশী এক মহিলা। এরপরই যত কাণ্ড। ঝগড়া থামতেই আত্মঘাতী হন বাবা। আর বাবার মৃত্যুর বদলা নিতে সোজা প্রতিবেশী মহিলার বাড়িতে হাজির ছেলে। ছুরির কোপে ওই মহিলাকে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠল যুবক ও তাঁর বন্ধুদের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের মুরারই থানার বড়ুয়া গোপালপুর গ্রামে। মৃত মহিলার নাম আরজিনা বিবি। জানা গিয়েছে, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আজহার শেখের সঙ্গে ঝগড়া হচ্ছিল তাঁর ছেলে মালেক শেখের। সেই ঝগড়া চলাকালীন অশ্রাব্য ভাষায় তাঁদের গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছিল আরজিনার বিরুদ্ধে। এ দিকে, ছেলের সঙ্গে ঝগড়ার পর বাড়ি থেকে বের হয়ে যান আজহার। একটু দূরে গ্রামের একটি রাস্তায় গিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
বাবার মৃত্যুর খবর পেতেই ছেলের সব রাগ গিয়ে পড়ে প্রতিবেশী আরজিনা বিবির উপর। অভিযোগ, এরপরই মালেক শেখ এলাকার আরও দুই যুবক এমদাদুল শেখ, সিরাজুল শেখের সঙ্গে মিলে চড়াও হয় আরজিনার বাড়িতে। কোনও কথা বলাবলি নেই, সোজা ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে তাঁদের বিরুদ্ধে।
আঘাতের ক্ষত এতটাই বেশি ছিল যে এলাকাবাসী বলেছেন আরজিনা বিবির পেটের নাড়িভুড়ি সব বেরিয়ে গিয়েছিল। হামলাকারীদের হাত থেকে মা-কে বাঁচাতে যান তাঁর মেয়ে, স্বামী দুলাল শেখ ও তাঁর মা মহিমা বিবি। অভিযোদ, দুলাল শেখের পেটেও ধারাল অস্ত্রের কোপ মারে হামলকারীরা। অস্ত্রের কোপ মারা হয় মহিমা বিবি বাম হাতেও। তাঁর বাম হাতের অনেকটা অংশ কেটে যায়। এই ঘটনায় তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জখমদের উদ্ধার করে প্রথমে মুরারই গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তিনজনকেই রামপুরহাট গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।