সাঁইথিয়া: চূড়ান্ত নাটকীয়তার শেষে সোমবার কাকভোরে সিবিআইয়ের (CBI) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা (Jiban Krishna Saha)। আর এরপরই জীবনের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন তাঁর সৎ মা ও সৎ বোন। বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন গ্রেফতার হওয়া বিধায়কের বিরুদ্ধে। উঠে এল জীবনের সঙ্গে তাঁর বাবার সম্পর্কের কথাও। বিধায়কের সৎ বোন চুমকি ও তাঁর মা গায়েত্রী সাহা থাকেন বীরভূমের সাঁইথিয়ায়। জানা যাচ্ছে, জীবনকৃষ্ণের বাবার দ্বিতীয় পক্ষের সন্তান বিবেকানন্দের ২০১৫ সালে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। সেই ঘটনার সঙ্গে কারা যুক্ত ছিল? সেই নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে চুমকি ও গায়েত্রী দেবীর মনে। এমনকী বাবা বিশ্বনাথ সাহার সঙ্গেও জীবন কৃষ্ণের সম্পর্ক খুব একটা ভাল নয় বলেই দাবি তাঁদের।
জীবনের সৎ বোন চুমকি বলছেন, ‘বাবার সম্পত্তি নেওয়ার জন্য সবসময় তিনি (জীবন) বাবার সঙ্গে বিরোধিতা করে এসেছেন। বাবা-ছেলের সুস্থ সম্পর্ক কোনওদিনই ছিল না। বাবাকে মারধর করেছিল। গদির ব্যবসায় আগুন পর্যন্ত লাগিয়ে দিয়েছিল। ব্যবসা সংক্রান্ত অনেক কাগজ তো পুড়িয়েই দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত সম্পত্তির জন্য লড়াই করেই যাচ্ছে বাবার সঙ্গে।’ আর ভাইয়ের মৃত্যু? সেই নিয়েই বা কী বলছেন চুমকি? প্রশ্ন করায় উত্তর এল, ‘কী হয়েছিল, তা নিয়ে আমরা এখনও ধোঁয়াশার মধ্যেই রয়েছি। তদন্ত চেয়েই বা আর কী করব? ভাই তো আর ফিরে আসবে না।’ ভাই বিবেকানন্দের উপর কী কোনও রাগ ছিল জীবনের? বিশ্বনাথ সাহার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী গায়েত্রী দেবী বলছেন, ‘রাগ ছিল ভাইয়ের উপর। বিবেকানন্দ বাবার সব কথা শুনত। বাবাকে সবসময় সাহায্য করত সে। সেই নিয়েই হিংসা করত জীবন।’
জীবনের বোন চুমকি বলছেন, ‘ঘেন্না লাগছে শুনে। আর কিচ্ছু বলার নেই। কুলাঙ্গার তো। ওর (জীবনের) যাবজ্জীবন বা ফাঁসি যা হওয়ার হোক।’
মুখ খুলেছেন জীবনের বাবা বিশ্বনাথ সাহাও। তিনিও বলছেন, জীবনের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই। জীবন কী করে, সেই বিষয়ে তাঁকে কিছু বলেও না এবং তিনিও খোঁজ রাখেন না জীবনের বিষয়ে। বললেন, ‘ব্যবসার ক্ষতি করে রাজনীতিতে যাওয়ার পর। মেয়ের নামে একটি পার্টনারশিপ দিতে গিয়েছিলাম, সেটি দরখাস্ত করে বন্ধ করে দিয়েছে। এটা রাজনীতির জায়গা নয়, জোর করে রাজনীতির জায়গা করেছে। রাজনৈতিক প্রভাবেই এসব করেছে। মারধরও করছে আমাকে। ২০১২ সালে থানায় ডায়েরিও হয়ে আছে। আমরা ভয়ে কিছু করতে পারি না।’