বীরভূম: কেস নম্বর ১৬৪! ২০২২ সালে হঠাৎ বাড়িতে এসে হাজির পুলিশ। হাতে এফআইআর-এর কপি। বাড়ি মালিককে গ্রেফতারির পরোয়ানা। তিনি নাকি এক নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন করেছিলেন। আকাশ থেকে পড়েছিলেন ৮৭ বছরের বৃদ্ধ। পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। প্রতিবেশীরা কটু নজরে দেখেছিলেন। এক বছর ধরে জেলেই থাকলেন, মেলেনি জামিনও। এক বছর পর সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রমাণিত হলেন বৃদ্ধ। শুক্রবার সিউড়ি আদালত স্পষ্ট করে দিল, সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল তাঁকে। তিনি নির্দোষ। জমি সংক্রান্ত বিবাদের থেকে ৮৭ বছরের এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে পকসো ধারায় মিথ্যা মামলা করেছিলেন প্রতিবেশী। আজ উল্টে তাঁরই হল সশ্রম কারাদণ্ড।
ঘটনাটি ২০২২ সালের। একটি জমি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছিল। জমি মালিক ওই বৃদ্ধ। এক পক্ষ তা জবরদখল করার চেষ্টা করেছিলেন। তাতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বৃদ্ধ। তাতেই ষড়যন্ত্র। ৩১ জুলাই বৃদ্ধের বাড়িতে এসে পৌঁছয় পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছিল। পকসো ধারায় বৃদ্ধকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতে মামলা চলে। কিন্তু এক বছরে জামিনও পাননি বৃদ্ধ।
শুক্রবার সেই মামলার শুনানি ছিল সিউড়ির বিশেষ আদালতে (পকসো আদালত)। বৃদ্ধের হয়ে আদালতে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবী সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। সওয়াল করেছিলেন সরকারি আইনজীবী মলয় মুখোপাধ্যায়।
বিচারক দুপক্ষের সওয়াল জবাব শুনে জানিয়ে দেন, বৃদ্ধ নির্দোষ। একই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগকারী মিথ্যা মামলা দায়ের করায় তাঁকে ৬ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। হয় আর্থিক জরিমানাও। এতদিন পর ঘরের মানুষ ঘরে ফিরছে, খুশি বৃদ্ধের পরিবার। সঙ্গে এও আবেদন করেন, এই ধরনের একজন মানুষের সামাজিক সম্মান অবক্ষয় করে। তা যেন কেউ কখনও না করেন।