100 days Work: কাজই হয়নি, ভুয়ো মাস্টার রোল বানিয়ে টাকা ‘আত্মসাৎ’, ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ

Rupak Ghosh | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Apr 07, 2023 | 12:12 PM

100 days Work: ১০০ দিনে কাজে একাধিক পুকুর সংস্কার ও মাটি ভরাটের কাজ করার কথা থাকলেও তা হয়নি। অথচ সেই টাকা ভুয়ো মাস্টার রোল বানিয়ে আত্মসাৎ করে নেওয়া হয়েছে।

100 days Work: কাজই হয়নি, ভুয়ো মাস্টার রোল বানিয়ে টাকা আত্মসাৎ, ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ
একশো দিনের কাজ নিয়ে দুর্নীতি

Follow Us

কুশমণ্ডি: ১০০ দিনের কাজে বড় সড় দুর্নীতির অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত কুশমণ্ডি ব্লকের বেড়ইল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। তথ্য জানার অধিকারের মাধ্যমে দুর্নীতির বিষয় জানতে পেরেই জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন গ্রামবাসী ও কংগ্রেস। ১০০ দিনে কাজে একাধিক পুকুর সংস্কার ও মাটি ভরাটের কাজ করার কথা থাকলেও তা হয়নি। অথচ সেই টাকা ভুয়ো মাস্টার রোল বানিয়ে আত্মসাৎ করে নেওয়া হয়েছে। এমনকি যাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে, তাঁদের বেশিরভাগই ভুয়ো বলে অভিযোগ। এছাড়াও কাজ না করেই অনেকের ভাগের কিছু টাকা পেয়েছে। বাকি টাকা আত্মসাৎ করেছে পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা। এই দুর্নীতি প্রকাশ্যে এনেছে কংগ্রেসের রাজ্য ছাত্র পরিষদের সভাপতি সৌরভ প্রসাদ। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে জেলাপ্রশাসন।

জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় ২০২০ সালে তিনটি পুকুর সংস্কারের কথা ছিল। কিন্তু সেই পুকুর এতদিন সংস্কার হয়নি। সম্প্রতি ব্লকে অভিযোগ জানানোর পরেই গত রবিবার রাতে সেখানে কাজের বোর্ড লাগানো হয়েছে। এদিকে যে ২০০ জনের তালিকা পাওয়া গিয়েছে, ওই অ্যাকাউন্টগুলিতে টাকা ঢোকার পরে সেই তথ্য অনলাইন থেকে ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে। যদিওবা পরে আরটিআইয়ের মাধ্যমে সেই কাজের মাস্টার রোল উদ্ধার করা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, যাদের নামে টাকা ঢুকেছে তারা অন্য সংসদের কিংবা বহু নামের খোঁজ পাওয়া যায়নি। এমনকি পরিচিত নাম থাকলেও জব কার্ডের নম্বর আলাদা।

এছাড়াও এমন অনেকেই রয়েছে, যাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকার পরেও সেই মজুরির কিছু টাকা দিয়ে বাকিটা তুলে নেওয়া হয়েছে। গত মাসে এই অভিযোগ দায়ের হয় কুশমণ্ডি ব্লকের কাছে। অভিযোগ পেয়েই ২৭ মার্চ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ব্লকের আধিকারিকরা। এরপরেও সমস্যার সমাধান হয়নি। অবশেষে বালুরঘাটে জেলা শাসকের দ্বারস্থ হন একাংশ গ্রামবাসী কংগ্রেস৷ এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷

এবিষয়ে কুশমণ্ডি ব্লকের বেড়ইল গ্রাম পঞ্চায়েতের খড়িকাদিঘি গ্রামের বাসিন্দা তথা অভিযোগকারী জাহিরদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমি আরটিআই করে ওই কাজের মাস্টাররোল বের করেছি। সেখানে কাজ না করেই প্রায় ২০০ জনের নামে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। যাদের অনেকেই ওই সংসদের না এবং অনেককে কিছু টাকা দিয়ে পুরো টাকাটি ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সহ অন্যান্যরা নিয়ে নিয়েছে।”

প্রতিবাদ করলে তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এবিষয়ে আরেক গ্রামবাসী নাজিবুর রহমান বলেন, “আমি কাজ করিনি। কিন্তু আমার অ্যাকাউন্টে ২১০০ টাকা ঢুকেছিল। পরে পঞ্চায়েতের লোকজন এসে আমাকে ২০০ টাকা দিয়ে বাকি ১৯০০ টাকা নিয়ে গিয়েছে। পরে বুঝতে পারি ভুল হয়েছে। আমার মত অনেকেই ঠকেছে। এনিয়ে তিনি প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন।”

এবিষয়ে কংগ্রেসের ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি সৌরভ প্রসাদ বলেন, “কুশমণ্ডি ব্লকের ওই পঞ্চায়েতে বড় সড় দুর্নীতি সামনে এসেছে। শুধু কুশমণ্ডি নয়, গোটা জেলা ও রাজ্য জুড়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। কেন্দ্র সরকার এই দুর্নীতির তদন্ত করেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না আসলে তৃণমূল ও বিজেপি একই কয়েনের দুই পিঠ।”

এবিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, “ফোনে এনিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। আমি লিখিত আকারে তা জানাতে বলেছি। এনিয়ে একটি অভিযোগ হয়েছে। পুরো ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হবে।”

অন্যদিকে পালটা ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান সিরাজুল ইসলাম বলেন, “এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। পুকুর সংস্কারের কাজ হয়েছে। তাতে অনেক দিন আগেই বোর্ড লাগানো হয়েছে। এছাড়াও যারা কাজ করেছে সবার অ্যাকাউন্টেই টাকা ঢুকেছে। এনিয়ে অভিযোগ হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখতে এসে অভিযোগের সত্যতা পাননি আধিকারিকরা।”

Next Article