শিলিগুড়ি: সরকারি স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় ফের একবার জটিল অস্ত্রোপচারে সাফল্য। ৯ বছরের এক ছোট্ট বাচ্চা খেলতে খেলতে একটি বাঁশি (Whistle) মুখে পুড়ে নিয়েছিল। তারপর সেটা ঢুকে গিয়েছিল শরীরের ভিতরে। আর সেখান থেকেই বিপত্তি। প্রথমে শুরুর দিকে কাশি। তারপর কিছুদিন পর থেকে ছোট্ট ওই শিশু যখনই জোরে নিঃশ্বাস ফেলত, তখনই বাঁশির আওয়াজ আসত। প্রায় একমাস ধরে এভাবেই চলছিল। প্রতিবেশী ও আত্নীয় পরিজনদের অনেকে পরামর্শ দিয়েছিল, খাবার খেলে মলের সঙ্গে ওই বাঁশি বেরিয়ে যাবে। কিন্তু এতদিন পরেই সেই সমস্যার সুরাহা হয়নি। নিশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে বাঁশির আওয়াজ বেরোনো বন্ধ হয়নি। অবশেষে গত পরশু সন্ধেয় জলপাইগুড়ির কুন্দারদিঘির ওই ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে আসা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। ভর্তি করানো হয় ইএনটি ওয়ার্ডে। শিশুটিকে হাসপাতাল পর্যবেক্ষণে রাখা হয় তখন থেকে।
সম্প্রতি ওই বাচ্চাটির সিটি স্ক্যান করানো হয় এবং দেখা যায় বাঁশিটি শরীর থেকে বেরোয়নি। ফুসফুসের ডানদিকের টারমিনাল ব্রঙ্কাসের কাছে আটকে ছিল বাঁশিটি। আর সেই কারণেই যখনই সে নিঃশ্বাস নিত, তখনই বাঁশির আওয়াজ আসত। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি বিশেষ দল গঠন করা হয় শিশুটির চিকিৎসার জন্য। আজ সকালে ওই শিশুর অস্ত্রোপচার করা হয়। অ্যানাস্থেশিয়া টিমকে সঙ্গে নিয়ে জটিল ব্রঙ্কিওস্কোপি করা হয় বাচ্চাটির এবং ফোরসেপের সাহায্যে ফুসফুসের কাছে আটকে থাকা ওই বাঁশিটি শরীর থেকে বের করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বাচ্চাটির শারীরিক অবস্থা এখন উন্নতির পথে।
অভিজ্ঞ চিকিৎসক রাধেশ্য়াম মাহাতো এই অস্ত্রোপচার টিমের নেতৃত্ব দেন। শিলিগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিমে ছিলেন চিকিৎসক গৌতম দাস, চিকিৎসক ধ্রুপদ রায়, চিকিৎসক সন্দীপ ঘোষ, চিকিৎসক তুহিন শাসমল, চিকিৎসক অজিতাভ সরকার, চিকিৎসক অজিতাভ সরকার, চিকিৎসক শুভম গুপ্ত, চিকিৎসক শেখ আজহারউদ্দিন ও চিকিৎসক সন্দীপ মণ্ডল।