শিলিগুড়ি: ছাব্বিশের নির্বাচনে তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি আসন! ভার্চুয়াল বৈঠকে উত্তরের নেতাদের এই বিধানসভা পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল সেনাপতি। ২০১১. ২০১৬-র নির্বাচনে এই বিধানসভা ছিল তৃণমূলের দখলে। পরপর দু’বার জিতে মন্ত্রী হয়েছিলেন গৌতম দেব। কিন্তু একুশের ভোটে গৌতমকে হারিয়ে ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি জিতে নেন বিজেপির শিখা চট্টোপাধ্যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা তো বটেই, তৃণমূলের একাংশ মনে করে, দল ডুবেছিল গোষ্ঠীকোন্দলেই। যদি গৌতম দেবের দাবি, বামের ভোট রামে যাওয়াতেই এই হার। এবার স্ট্র্যাটেজি ঠিক করে আসন পুনরুদ্ধার করবে তৃণমূল, চ্যালেঞ্জ গৌতম দেবের। যদিও বিজেপির পাল্টা দাবি, যতই চেষ্টা করুক, এবারও ডাবগ্রাম ফুলবাড়িতে পদ্মই ফুটবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তরে বিজেপির নিশ্চিত আসন ফুলবাড়ি-ডামগ্রাম। কিন্তু সূত্রের খবর, বিজেপিকে হারাতে এখন থেকে স্ট্র্যাটেজি তৈরি করছেন তৃণমূলের নম্বর টু! এলাকার নেতা কর্মীদের ভার্চুয়ালি একাধিক বার্তা দিচ্ছেন।
শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান গৌতম দেব বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় খুব জোর দিয়ে বলেছেন, যে যে জায়গাগুলো ধারাবাহিক ডাউনফল হচ্ছে, সেখানে খুব গভীর গিয়ে তার কারণ খুঁজে বার করতে হবে। সেগুলি নিয়ে পর্যালোচনা করা, প্রয়োজনে নেতৃত্বের বদল করা, যা যা বলার সবটাই উনি বলেছেন। দল দলের মতো করে কাজ করছে। প্রচুর কাজ হয়েছে ডাবগ্রাম ফুলবাড়িতে, মানুষ সেটা বুঝতে পারছে। কিন্তু কেবল কাজের ব্যাপার নয়, সাংগঠনিক দিক থেকে নিশ্চয়ই কোনও ঘাটতি হচ্ছিল, সব মিলিয়ে পর্যালোচনা হচ্ছে।”
অন্যদিকে বিজেপি নেতা বাবলু বর্মনের বক্তব্য, “এখানে তৃণমূলের ৯০ শতাংশ নেতাই হচ্ছেন জমির দালাল। সেটার ওপরেই চলে। ওরা বিশ্বাস করে গুন্ডা মেকানিজমে। ওরা বিশ্বাস করছেন, আবার যদি বুথ জ্যাম, ছাপ্পা ভোট দিয়ে আসন জেতা যায়, তার পরিকল্পনা ওরা করছে। কিন্তু সঠিকভাবে ভোট হলে ডাবগ্রাম ফুলবাড়িতে তৃণমূলের কোনও অস্তিত্ব নেই।”
সিপিএম নেতা অনিমেশ সরকার বলেন, “সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে ধর্মীয় মেরুকরণ। মানুষের মধ্যে ধর্মীয় ভেদাভেদকেই এরা মানুষের সামনে নিয়ে এসেছে। আর তৃণমূলের তো পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি। ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি হচ্ছে জমি কেলেঙ্কারির একটা গড়। লোক দেখানো কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা এখনও তৃণমূলের মধ্যে রয়েছে।”
ডাবগ্রাম ফুলবাড়িতে হার পিছনে তৃণমূল আরও একটি ইস্যু তুলে ধরেছে, তা হল ‘ভূতুড়ে ভোটার’। রাজ্যের শাসক দলের দাবি, ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের পরে, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির ভোটদাতার সংখ্যা বেড়েছিল প্রায় ২৪ হাজার। গত বছর লোকসভা ভোটের আগে ডাবগ্রামের ভোটার বেড়েছে ১০ হাজারেরও বেশি। এই বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সুর চড়িয়েছে শাসকদল। ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির ভোটার তালিকা পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই করার দাবি জানিয়েছে তারা।