
শিলিগুড়ি: পাটনাগামী ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস থেকে ৫৬ জন তরুণীর উদ্ধারের পর থেকেই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। উত্তরবঙ্গে কী আবার সক্রিয় পাচার চক্র? দরিদ্র পরিবারগুলির মেয়েদেরই বেছে বেছে টার্গেট করা হচ্ছে? একুশে জুলাইয়ের ভিড়ের সুযোগ নিয়েই পাচারের ছক কষেছিল দুষ্কৃতীরা। এমনটাই খবর সূত্রের। এনজেপি জিআরপি-র ডেপুটি পুলিশ সুপার পারিজাত সরকার বলছেন, ওদের বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যাচ্ছিল। একটি মোবাইল কারখানায় কাজের কথা বলেছিল। কিন্তু ওদের ব্রেক জার্নি করে নিয়ে যাওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। ধৃতদের কথাতেও অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। ইতিমধ্যেই পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে তরুণীদের। পুলিশ বলছে, তাঁদের অভিভাবকরাও জানিয়েছেন তাঁদের মেয়েদের ভিনরাজ্যে নিয়ে যাওয়ার গোটা বিষয়ে সঠিকভাবে জানানো হয়নি।
সূত্রের খবর, শিলিগুড়িতে ভবেশ মোড় এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, হস্টেল। এখানেই মেয়েদের এনে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দিয়ে আস্থা অর্জনের পর কাজের নামে বাইরে পাঠানো হত। এই যুবতীদের উদ্ধার ও দু’জনকে গ্রেফতারের পর ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের। এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্যের নানা এমব্লেমের ব্যবহার হত প্রচারে। তবে সংস্থার সাইনবোর্ড-সহ নানা ফ্লেক্সে কোথাও সংস্থার রেজিস্ট্রেশন নম্বর নেই। যদি সত্যিই এই কেন্দ্রে মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ভিনরাজ্যে কাজে পাঠান হত, তাহলে এরা ঝাঁপ বন্ধ করে পালাল কেন? এই প্রশ্নেই সন্দেহ বাড়ছে পুলিশের।
পাশাপাশি কারা এই বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিলেন সে সম্পর্কে স্থানীয় থানার কাছেও তথ্য নেই। বাড়ির মালিক এলাকায় থাকেন না। এলাকার বাসিন্দারা এসব নিয়ে কিছুই বলতে পারছেন না। এদিকে এ নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে। আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল নেতা বিধান সরকার বলেন, “চা বাগানের ছেলেমেয়ারই কেন বাইরে যাচ্ছে? কারণ তাঁদের রুটিরুজি নেই। চা শিল্প পরিচালনা করে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ টি বোর্ড। টি বোর্ড এখন উদাসীন।”
অন্যদিকে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ আবার বলছেন, “একদিকে প্রকৃতিকে লুঠ করা হচ্ছে। আর একদিকে চা বাগানে মানব পাচারকারীদের সংখ্যা বাড়ছে। উত্তরবঙ্গের জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব এই বিষয় নিয়ে আরও সরব হওয়া। উত্তরবঙ্গের মানুষের বিশেষ করে চা বাগান শ্রমিকদের যে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্তর অবধি আমি দরবার করব।”