
শিলিগুড়ি: সামনের বছর বিধানসভা ভোট। তার আগে উত্তরবঙ্গের রাজ্য-রাজনীতি প্রতি মুহূর্তে যেন নতুন-নতুন রূপ দেখাচ্ছে। কয়েকদিন আগে বিজেপির বড় নেতা জন বার্লা তৃণমূলে যোগ দিয়ে ঘাসফুলের ঘর শক্ত করেছেন। কিন্তু সেই উত্তরবঙ্গেই এবার মাথাচাড়া দিচ্ছে তৃণমূলের অন্দরের কোন্দল। তিন বছর ধরে শিলিগুড়িতে পৌরনিগম চালাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। নেতৃত্ব দিচ্ছেন সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্থাভাজন গৌতম দেব। কিন্তু এবার সেই নেতৃত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন মেয়র পারিষদ দিলীপ বর্মণ। আগামী পরশু মেয়র পারিষদ পদে পদত্যাগ করবেন তিনি। বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলের অন্দরে এই ফাটল এবার চলে এল প্রকাশ্যে।
দিলীপ বর্মণের বলেন, “আমি পুরসভায় কাঠের পুতুল। কাজ করতেই দেয় না আমাদের। কোটি কোটি টাকার টেন্ডার ও কাজ এগোচ্ছে। আমি মেয়র পরিষদ হিসেবে কাগজপত্রে সই করছি। কিন্তু কী কাজ,কারা টেন্ডার পেলেন, কতটা কাজ এগোল কিছুই জানি না। স্টেডিয়াম সংস্কারে আট কোটির কাজ আমি কাগজপত্রে সই কারলেও কিছুই জানা নেই।” তিনি এও বলেন, “আমি দল করতে এসেছি নিজের সম্মান বজায় রাখতে। আমার পরিচিতদের সকলের সম্মান আমার সঙ্গে জড়িত।” এরপর একে একে উদাহরণ দেওয়া শুরু করেন তিনি। বলেন, “খেলাধুলায় কত বাজেট হবে সেটা আমি পৌঁছে দেব মেয়রের কাছে। উনি সই করবেন। এখানে তা উল্টো। বাজেট কত হবে জানব না। ওই মেয়র নিজে হিসাব করে পাঠান। সই করে দাও। তাহলে আমার থাকার দরকার নেই…।”
একই সঙ্গে, তিনি বলেন, “একটা স্টেডিয়াম তৈরি হচ্ছে। শুনেছি আট কোটি টাকার কাজ হচ্ছে। আমি শুধু এটা জানি। তবে কোন কনট্রাক্টর কাজ করছে, কেমন কাজ করছে এই সব জানি না…।” পরবর্তীতে বিস্ফোরক দাবি করেন তিনি। বলেন, “আমায় অন্ধকারে রাখছে। শেষে রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যের মতো হব নাকি? শ্মশানঘাটে পয়সা খেল কে? ফাঁসল কে? দেখা গেল পয়সা খেল কে, ফাঁসল কে?”
এরপর ট্রেড লাইসেন্সে নিয়েও উদাহরণ টানেন তিনি। বলেন, “ট্রেড লাইসেন্স অনলাইনে আবেদন করতে হয়। ছ’ মাসের মধ্যে সার্ভে করতে হয় যে আবেদনকারীর কাগজপত্র ঠিক আছে কি না। সেই সার্ভের জন্য যখন স্টাফ পাঠাই, তখন স্যর বলছে সার্ভে কেন করছ? কামাইয়ের ধান্দায়? মেয়র পরিষদ সার্ভে করছে টাকা কামাইয়ের জন্য়? এইসব কথা মেয়র যদি আলোচনা না করেন তাহলে আমার থাকার দরকার নেই।তাই আগামী পরশু বোর্ড মিটিং এ এসবের সদুত্তর না পেলে পদ থেকে পদত্যাগ করব।”
তবে এই নিয়ে মেয়র গৌতম দেব বলেন, “এ নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলব না। দলের বৈঠক আগামিকাল হবে। সেখানেই আলোচনা হবে।”