Pahalgam Attack: পাকিস্তানকে ভাতে মারতেই সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত, ঠিক কী কী সমস্যায় পড়বে পাকিস্তান?
Pahalgam Attack: বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় ১৯৬০ সালের সেপ্টেম্বরে করাচিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের মধ্যে সিন্ধু জল চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। চুক্তি অনুসারে, সিন্ধু এবং তার দুই উপনদী, বিতস্তা (ঝিলম) ও চন্দ্রভাগার (চেনাব) জলের উপরে অধিকার ও কর্তৃত্ব থাকবে পাকিস্তানের।

শিলিগুড়ি: পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার এফেক্ট! মঙ্গলবার নয়া দিল্লিতে ধাপে ধাপে বৈঠক হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে একগুচ্ছ সিদ্ধান্তের কথা বলা হয়েছে। ভারত সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করতেই দৃশ্যত মাথায় হাত পড়েছে পাকিস্তানের। পাকিস্তানকে ভাতে মারতেই সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল, বলছেন বিশেষজ্ঞরাই। ঠিক কী কী সমস্যায় পড়বে পাকিস্তান?
বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় ১৯৬০ সালের সেপ্টেম্বরে করাচিতে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের মধ্যে সিন্ধু জল চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। চুক্তি অনুসারে, সিন্ধু এবং তার দুই উপনদী, বিতস্তা (ঝিলম) ও চন্দ্রভাগার (চেনাব) জলের উপরে অধিকাংশ অধিকার ও কর্তৃত্ব থাকবে পাকিস্তানের। অর্থাৎ সিন্ধু ও তার উপনদী-শাখা নদীর জলের ওপরে পাকিস্তানের অধিকার থাকবে ৮০ শতাংশ, ভারতের ২০ শতাংশ।
ভারতের নিয়ন্ত্রণে থাকবে সিন্ধুর অন্য তিন উপনদী— বিপাশা (বিয়াস), শতদ্রু (সাতলেজ়) এবং ইরাবতীর (রাভি) জলের উপর। এই চুক্তির অন্যতম শর্তই ছিল, ভারত বা পাকিস্তান নিজেদের প্রয়োজনে ওই জল ব্যবহার করলেও কোনও অবস্থাতেই জলপ্রবাহ আটকে রাখতে পারবে না।
পাকিস্তানের দিকে যে তিনটি নদী বয়ে গিয়েছে, সেই নদীর জল মূলত ‘হাইড্রোইলেট্রিক জেনারেটর’ প্রকল্পে ব্যবহার করতে পারবে ভারত। এই জলকে সংরক্ষণ করার অধিকার ভারতের সেভাবে নেই।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রঞ্জন রায়ের মতে, সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করা হলে পাকিস্তানের ৬১ শতাংশ জনসংখ্যায় প্রভাব পড়তে বাধ্য। যে এলাকা দিয়ে এই নদী গিয়েছে তা অন্তত পাকিস্তানের ৮০ শতাংশ কৃষিকাজকে উপকৃত করে। জলচুক্তি স্থগিত হওয়ায় কৃষিকাজ যেমন ব্যাহত হবে, তেমনি যে শহুরে এলাকা দিয়ে সিন্ধু ও তার শাখানদী, উপনদী এগিয়েছে সেখানকার (করাচি, লাহোর, মুলতান) পানীয় জলপ্রকল্প সঙ্কটে পড়বে। দ্বিতীয়ত, পাকিস্তানে সিন্ধু অববাহিকায় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ব্যাপক ভাবে ব্যাহত হতে পারে। ব্যাপক বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা যাবে বা বলা ভালো অন্ধকারে ডুবে যাবে পাকিস্তান। অর্থাৎ একদিকে, জলসঙ্কটের কারণে কৃষিকাজ হবে না, অন্যদিকে, বিদ্যুতের পরিষেবা থমকে যাওয়ায় শিল্পাঞ্চলও মুখ থুবড়ে পড়বে। সব দিক থেকেই এই চুক্তি স্থগিত হওয়া পাকিস্তানের জন্য মোক্ষম জবাব বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
এদিকে ভারতের সিদ্ধান্তকে ‘জল-যুদ্ধ’ হিসাবে দেখতে শুরু করেছে পাকিস্তান সরকার। পাক বিদ্যুৎমন্ত্রী আওয়াইস আহমেদ খান লেঘারি সমাজমাধ্যমে এমনটাই দাবি করেছেন। একই সুর শোনা গিয়েছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা সরতাজ আজিজের গলাতেও।
জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবারই পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন সেদেশের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। বুধবার দফায় দফায় বৈঠকের পর ভারত যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তথা অর্থনৈতিক বিষয়টিও সরাসরিভাবে ধাক্কা খাবে। সেই বিষয়টি কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই থরহরিকম্প অবস্থা পাকিস্তানের!





