
শিলিগুড়ি: সকালে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুুপুর গড়ানোর পর নাগরাকাটায় আক্রান্ত বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুকে দেখতে শিলিগুড়ি বেসরকারি হাসপাতালে যান রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কথা বলেছেন আক্রান্ত বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের সঙ্গেও। হাসপাতাল থেকে বেরিয়েই খগেন মুর্মুর বর্তমান শারীরিক অবস্থার কথা বলেন। আর সে প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই আরও একবার রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন শুভেন্দু। সরাসরি নিশানা করেন ডিজিপি রাজীব কুমারের উদ্দেশেই।
হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়েই শুভেন্দু রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ছাব্বিশে এই রক্তের বদলা হবে সুদ সমেত। বাংলার উসুল করবে। বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা হবে। জলপাইগুড়ির এসপি, ডিজিপি রাজীব কুমার দিল্লি যাওয়ার জন্য ব্যাগ গুছিয়ে রাখুন। স্পিকারের কল আসবে।” উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই লোকসভার স্পিকার ওমপ্রকাশ বিড়লা এই ঘটনায় রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে। অতি দ্রুত রাজ্যকে রিপোর্ট দিতে হবে, তা না হলে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে বলেও শিলিগুড়িতে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরণ রিজিজু।
ইতিমধ্যেই সাংসদ-বিধায়কের ওপর হামলার ঘটনায় মণ্ডল সভাপতি ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগের শুনানি হবে। এ প্রসঙ্গে শুভেন্দু এদিন আরও বলেন, “রাজ্য সভাপতির (শমীক ভট্টাচার্য) দাবিকে সমর্থন করে জানাই, এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তের প্রয়োজন। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে জামাতের লিঙ্ক রয়েছে কিনা, খুঁজে বার করতে হবে।” উল্লেখ্য, সাংবাদিক বৈঠক করে নাগরাকাটায় হামলার ঘটনায় NIA তদন্তের দাবি জানিয়েছেন খোদ শমীক ভট্টাচার্য।
সোমবার দুপুরে দুর্যোগকবলিত নাগরাকাটায় একাধিক এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মালদহ উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু এবং শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। বামনডাঙায় ঢোকার আগে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। অতর্কিতে তাঁদের গাড়ি লক্ষ্য করে লাঠি, জুতো নিয়ে চড়াও হন অনেকে। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ নদীর ধার থেকে পাথর তুলে ছুড়তে থাকেন। গাড়ি থেকে নেমে বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন সাংসদ। তখনই অতর্কিতে ছোড়া ইট এসে তাঁর চোখের নীচে লাগে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর আঘাত গুরুতর। চোখের নীচের অতি স্পর্শকাতর হাড় ভেঙে গিয়েছে তাঁর। আপাতত শিলিগুড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।