
ধূপগুড়ি: কার দখলে ধূপগুড়ি? তা এখন সময়ের অপেক্ষা। গণনার প্রাথমিক ট্রেন্ডে জয়ের গন্ধ পাচ্ছে বিজেপি। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, পোস্টাল ব্যালট গণনা চলছে। তাতে এগিয়ে রয়েছেন বিজেপি প্রার্থী তাপসী রায়। প্রথম রাউন্টে ১৭০০ ভোটে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। পিছিয়ে রয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী নির্মল চন্দ্র রায়। পিছিয়ে কংগ্রেস সমর্থিত বাম প্রার্থী ইশ্বরচন্দ্র রায়। শেষ হাসি কে হাসেন, সেটাই এখন দেখার।
বানারহাটে ইতিমধ্যে গেরুয়া শিবিরে খুশির হাওয়া। উচ্ছ্বসিত কর্মী সমর্থকরা। ইতিমধ্যেই গণনাকেন্দ্রের বাইরে ক্যাম্পের পাশে মাংস ভাত রান্না হচ্ছে। রয়েছেন বিজেপির শীর্ষ স্তরের নেতৃত্বও। বিজেপি নেতা রথীন্দ্রনাথ বোসের বক্তব্য, “নির্বাচনের দিন থেকেই আমাদের কোনও চিন্তা ছিল না। আমরা নিশ্চিত ছিলাম, এখানে আমরা খুব ভাল মার্জিনে জিতব। বিধানসভায় যে ব্যবধানে জিতেছিলাম, তার থেকে ভাল ব্যবধানে জিতব আমরা।”
এবার উপ নির্বাচনে ধূপগুড়িতে একটা বড় ফ্যাক্টর কাজ করেছে। ভোট প্রচারে যখন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এসেছিলেন, তার মঞ্চেও দেখা গিয়েছিল বিধায়ক মিতালি রায়কে। ঠিক তার পরদিনই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন মিতালি। তৃণমূল বরাবরই উত্তরের রাজবংশী ভোটকে টার্গেট করেছে। কিন্তু হিসাব বলছে, রাজবংশীরা মন উজাড় করেছেন পদ্মের ঝুলিতেই। কী বলছেন বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি ঘোষ? তাঁর বক্তব্য,”বিজেপি আসলে সমস্ত জনজাতি গোষ্ঠীকে সমর্থন করে। কেন তৃণমূলকে মানুষ ভোট দেবে? বিধানসভায় বিধায়কদের বেতন বাড়াচ্ছেন। হাজার হাজার ছেলেমেয়ে রাজপথে দাঁড়িয়ে, সরকারি কর্মীরা বঞ্চিত। কেন মানুষ ভোট দেবে?”
তৃণমূল নেতা গৌতম দেব বলেন, “ব্যালট চলছে। সিনিয়র সিটিজেনদের ভোটটা গণনা হয়েছে। বিজেপি কিছুটা এগিয়ে রয়েছে। বানারহাট আমাদের কিছুটা দুর্বল জায়গা। চা বাগান রয়েছে। পরের রাউন্ডে দেখি কী হয়।”
যেখানে তৃণমূল নেতৃত্ব একপ্রকার স্বীকারই করে নিচ্ছেন, বানারহাট তাঁদের দুর্বল জায়গা। সেখানে প্রথম থেকেই ওই এলাকাকে টার্গেট করে নিয়েছিল গেরুয়া শিবির। সূত্রের খবর, বিজেপি নেতৃত্বের চিন্তা ছিল, বানারহাটে ফল খারাপ হতে পারে। ফলে বিশেষ নজর দেওয়া হয়। সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া মনোজ টিগ্গাকে। তিনি সঙ্গে নেন নগরাকাটার বিধায়ক পুনা ভেংরাকে। দু’জনে পরিস্থিতি বদল করেন, চা বলয় এলাকার সংগঠনকে মজবুত করে তোলেন। বিজেপির পরিষদীয় দলেরও তেমনই বক্তব্য। তারই ফল ধরা পড়ল এই উপনির্বাচনে। পাশাপাশি ভোটে প্রচারের শেষ লগ্নে চা বাগানগুলিতে আলাদা করে ঘুরে মানুষের দুয়ারে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁদের অভাব অভিযোগ শুনেছিলেন, চা শ্রমিকদের পরিস্থিতি সম্যক বোঝার চেষ্টা করেছিলেন। তা থেকেই ফল ঘুরছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।