‘বাবাকে একটা স্ট্রেচার, একটু অক্সিজেন দিতে পারত না ওরা!’ অ্যাম্বুলেন্সেই মৃত্যু করোনা আক্রান্তের
করোনা (COVID 19) সংক্রমণের গ্রাফ চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। রোগীর সংখ্যা বাড়ছে প্রত্যেকদিন। বেড-অক্সিজেনের অভাবে ধুঁকছে গোটা দেশ।
আরামবাগ: বেড মিলছে না, অক্সিজেনও (Oxygen) নেই পর্যাপ্ত। রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে উঠছে অভিযোগ। ঠিক সময়ে অক্সিজেন বা চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত। এবার হৃদয়বিদারক এক ছবি উঠে এল আরামবাগ (Arambag) থেকে। বাবার চিকিৎসার জন্য বারবার হাসপাতালে ছুটে গেলেন মেয়ে। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সে পড়ে থেকেই মৃত্যু হল করোনা আক্রান্তের। শ্বাসকষ্ট নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই পড়ে ছিলেন ওই রোগী। চিকিৎসায় উদাসীনতার নির্মম ছবি ধরা পড়ল আরামবাগে।
আজ, বুধবার সকাল থেকেই তারাপদ চক্রবর্তী নামে ওই বৃদ্ধের প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তিনি খানাকুলের জয়রামপুরের বাসিন্দা। বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থেকেও মিলল না চিকিৎসা। সাহায্য করতে এগিয়ে এল না কেউ। আরামবাগের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ধরা পড়ল সেই উদাসিনতার ছবি। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে চিকিৎসকদের ভূমিকা নিয়ে। চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েেন মৃত রোগীর আত্মীয়রা।
তাঁর মেয়ে রুমা চক্রবর্তী জানান, বাবার শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন তাঁরা। হাসপাতালের সামনে এসেও এ ভাবে বাবাকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন রুমা। কাঁদতে কাঁদতে জানান, তিনি বাবার চিকিৎসার জন্য বারবার ছুটে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। অ্যাম্বুলেন্সের চালকও হাসপাতালে ছুটে যান। কিন্তু কেউ আসেনি। রুমা বলেন, ‘একটা স্ট্রেচার দিতে পারত না? একটু অক্সিজেন দিতে পারত না? ওদের বাবা হলে কি ওরা চিকিৎসা দিত না? ওরা আমার বাবাকে মেরে ফেলল।’ পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার রুমা জানান, খানাকুল থানার পুলিশ আবেদন জানালেও কোনও লাভ হয়নি।
আরও পড়ুন: ফের অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু রাজ্যে, ৬ ঘণ্টা ধরে পড়ে রইল দেহ
এমই সব মর্মান্তিক ছবি উঠে আসছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে। খাস কলকাতাও ধুঁকছে অক্সিজেনের অভাবে। বুধবার সকালেই দক্ষিণ দমদমে অক্সিজেন না পেয়ে এক মহিলার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর তাঁর দেহ সৎকার করতেও হয়রানির শিকার হতে হয় পরিবারকে।