জলপাইগুড়ি: রাজ্যে উর্ধমুখী করোনার গ্রাফ। জলাইগুড়িতেও ব্যাপক প্রকোপ কোভিডের। রাস্তায় বেরতেই অনেকে ভয় পাচ্ছেন। এই ঘোর করোনাকালে জলপাইগুড়ি শহরের ব্যস্ততম রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আয়েস করে ললিপপ চুষছিলেন এক মাঝবয়সী যুবক। এদিকে কোভিড বিধি কেমন মেনে চলছে তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে তখন রাস্তায় নেমেছেন স্বয়ং মহকুমা শাসক।
যুবকের মুখে মাস্ক না দেখতে পেয়ে এক ধমক দেন মহকুমা শাসক। কিন্তু তাতে কোনও বিকার দেখা গেল না যুবকের। উল্টে মহকুমা শাসকের উদ্দেশে অদ্ভুত অঙ্গভঙ্গি শুরু করেন। পরিস্থিতি দেখে তখন হেসে কুটোকুটি আশেপাশের মানুষজন।
এদিকে জেলাশাসক যুবককে ফের মাস্ক পরতে বলেন। এ কথা শুনে এবার তাঁর সটান প্রশ্ন, “তাহলে ললিপপ খাব কীভাবে?” এমন উত্তরে দৃশ্যতই অপ্রস্তুত দেখায় মহকুমা শাসককে। এদিকে পাশের পুলিশ আধিকারিক যেই তাঁকে বাড়ি গিয়ে ললিপপ খেতে বলেন, যুবকের উত্তর, রাস্তাতেও তো খাওয়া যায়! এ ভাবেই মহকুমা শাসক ও পুলিশের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ তর্ক চালিয়ে যান তিনি। কোনওভাবেই যুবককে মাস্ক পরাতে না পেরে মহকুমা শাসক তাঁকে আটক করার নির্দেশ দেন। পুলিশ তাঁকে আটক করতে গেলে তাঁদের সঙ্গেও কথা জুড়ে দেন ললিপপ চুষতে চুষতেই। পরিস্থিতি দেখে আশেপাশে থাকা মানুষের মধ্যে হাসির রোল ওঠে।
বুধবার রাতে জেলাশাসকের নির্দেশ করোনা স্বাস্থ্য বিধি নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা প্রচারে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার ও তাঁর বিশাল টিম এদিন অভিযানে নেমেছিলেন। ছিলেন জলপাইগুড়ি সদরের মহকুমা শাসক সুদীপ পাল। এদিন তিনি জলপাইগুড়ি শহর জুড়ে অভিযান চালান। পথচলতি মানুষের মুখে মাস্ক না থাকলে তাঁদের মধ্যে মাস্ক বিতরন করার পাশাপাশি সচেতন করেন।
মহকুমা শাসক বলেন, “আমরা জেলাশাসকের নির্দেশ মেনে মানুষের মধ্যে করোনা সচেতনতা প্রচারের পাশাপাশি মানুষ কতটা আদৌ কতটা সচেতন তা দেখতে অভিযান চালাই। দেখলাম মানুষ অনেক সচেতন। বেশিরভাগ লোকজনের মুখে মাস্ক আছে। যাঁরা মাস্ক পরেননি তাঁদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করলাম।” এই অভিযানেই জলপাইগুড়ি কদমতলা সংলগ্ন একটি শপিং মলের কাছে মাস্ক না পরা ললিপপ হাতে যুবকের সঙ্গে মহকুমা শাসকের সাক্ষাৎ। বাকিটা ইতিহাস।