
হাওড়া: গত দুদিনে পারদ অনেকটাই নেমেছে। রাতের খাবার তাড়াতাড়ি সেরে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তাই উষ্ণতা প্রথমে আঁচ করতে পারেননি তাঁরা। যতক্ষণে পেরেছেন, ততক্ষণে আগুনের লেলিহান শিখা প্রায় গ্রাস করে ফেলেছে বাড়ির চতুর্দিক। ঘর থেকে বেরনোর কোনও পথ খুঁজে পাচ্ছিলেন না তাঁরা। প্রতিবেশীরা বাইরে থেকে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কাজ হয়নি। ওই অবস্থাতেই জ্যান্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল চার জনের। তার মধ্যে নবম শ্রেণির এক ছাত্রী রয়েছে। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়া জয়পুরের সাউড়িয়া গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম ভাড়ু দোলুই(৭৫),
দুধকুমার দলুই(৫০), রত্না দলুই(৪৫), শম্পা দলুই(১৫)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সাড়ে বারোটা নাগাদ হঠাৎই ঘরের মধ্যে আগুন লেগে যায়।চারজনই ঘরের মধ্যে আটকে পড়ে। বাইরে বেরনোর পথ খুঁজে পাচ্ছিলেন না তাঁরা। চিৎকার চেঁচামেচিতে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। বালতি-গামলা করে জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় দমকল। কিন্তু যতক্ষণে দমকল পৌঁছয়, ততক্ষণে ঘরের মধ্যেই ঝলসে যান চার জন। তাঁদেরকে গ্রামবাসীরা উদ্ধার করতে পারেননি।
দমকল ঘন্টা খানেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। শোওয়ার ঘরের ভিতর থেকেই উদ্ধার হয় একই পরিবারের চার জনের ঝলসে যাওয়া দেহ। কী থেকে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, কোনও কারণে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। যদিও বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন দমকল আধিকারিকরা। তদন্ত করছে পুলিশও। তবে পাড়ার মধ্যেই একই পরিবারের চার জনের এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ প্রতিবেশীরা। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
মৃতের ভাই রাজকুমার দোলুই বলেন, “আমরা যখন আসি, দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। ভিতরে গ্যাস সিলিন্ডার ছিল। মাটির বাড়ি, ঘরে আসবাবপত্র, জামাকাপড় সব ছিল। সব পুড়ে খাক হয়ে যায়। ওদেরকে বাড়ি থেকে বার করে আনা সম্ভব হয়নি।”
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বিধায়ক সুকান্ত পাল। তিনি বলেন, “অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, ইলেক্ট্রিক শক লেগেই হয়েছে। পুলিশ বিষয়টা খতিয়ে দেখছে।”