উলুবেড়িয়া: স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। সেই সন্দেহ মাথাচাড়া দেয় স্বামীর মধ্যে। আর বাড়তে থাকা সন্দেহ যে কখন এমন হিংসার রূপ নেবে কেউ হয়ত বুঝতেও পারেনি। মহিলা অন্য যুবকের সঙ্গে প্রেম করছে স্রেফ এই সন্দেহে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনায় গ্রেফতার অভিযুক্ত। মৃতের নাম মীনা পণ্ডিত (৪৫)। বাড়ি রাজাপুর থানার কমলাচক গ্রামে। ঘটনার পর স্বামী রবিন ভাঙ্গি রাজাপুর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে বলে খবর।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মীনা পণ্ডিতের স্বামী ও পরিবার আছে। অন্যদিকে, রবিন ভাঙ্গীরও স্ত্রী পরিবার রয়েছে। তবে সাত-আট বছর আগে রবীন ও মীনা ভালবাসায় জড়িয়ে পড়েন। তারপর বিয়ে করেন একে অপরকে। বেশ কয়েকদিন সব ঠিকঠাক কাটেও। সুখের সংসার পাতবেন বলে কমলাচক খালপাড়ে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন দম্পতি। মীনা সবজি ব্যবসার পাশাপাশি রান্নার কাজ করতেন। সেখানেই কাজ করতেন রবিনও।
তবে বেশ কয়েকদিন ধরে রবিনের শরীর খারাপের জন্য ওই মহিলা একাই রান্নার কাজে যেতেন। সেখান থেকেই শুরু হয় রবিনের সন্দেহ। তাঁর ক্রমাগত মনে হতে থাকে এই বুঝি তাঁর স্ত্রী সেখানে অন্য কারোর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন! সেই সন্দেহের বসেই নিত্যদিন দম্পতির মধ্যে ঝগড়া হত।
মাস দেড়েক আগে বাণীবনে মায়ের কাছে চলে আসেন মীনা। তবে দু’জনের মধ্যে দেখা সাক্ষাৎ ছিল অল্পসল্প। অভিযোগ, সোমবার সন্ধ্যেবেলায় মীনা স্বামীকে খাবার দেওয়ার জন্য ডেকে পাঠান নিমদিঘি বাসস্ট্যান্ডে। তারপর সেখান থেকেই রবিন তাঁর স্ত্রীকে বলেন উলুবেড়িয়া স্টেশন ঘুরিয়ে নিয়ে আসবেন তাঁকে। সেই মতো এক নম্বর প্লাটফর্মের আপ লাইন দিয়ে দু’জনে হাঁটা শুরু করেন।
জানা যাচ্ছে, সেখানে কথা বলার পরও সম্পর্ক তো ঠিক হয়ইনি, উল্টে আবারও ঝগড়া জোরাল হয় তাঁদের মধ্যে। অভিযোগ, এরপরই স্বামী মাথা গরম করে নিয়ে ফেলেন চরম সিদ্ধান্ত। নির্জন জায়গা দেখে আলুর বস্তা পেঁচিয়ে মীনার গলায় ফাঁস লাগিয়ে দেন। তারপর তাঁকে লাইনের পাশে ঝোপের মধ্যে ফেলে দেয়।
ঘটনার পরেই রবিন রাজাপুর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। ঘটনার খবর জানতে পেরে উলুবেড়িয়া জিআরপি ঘটনাস্থল থেকে দেহটি উদ্ধার করে উলুবেড়িয়া শরৎচন্দ্র মেডিকেল কলেজে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। রবিনকে জিআরপি থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাঁকে আজ উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে তোলা হবে।
আদালতে যাওয়ার সময় রবীন বলেন, “মীনার চরিত্র খারাপ ছিল। এ ছেলে ও ছেলে করে বেড়াত। দড়ি পেঁচিয়ে মেরে ফেলেছি।”