হাওড়া: হাওড়া ব্রিজ পার করে গিয়েছিলেন। গন্তব্য তাঁর নবান্ন। সম্বল হুইলচেয়ার আর এক বুক আশা। কিন্তু হাওড়া ব্রিজ পার করতেই নজরে পড়ে যায় পুলিশের। পুলিশকর্মীরা তাঁকে আটকান। তখনও বিষয়টা নিয়ে তাঁরা সন্ধিহান ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বছর বিয়াল্লিশের ওই ব্যক্তির আসলে চাকরিপ্রার্থী। দু’বার এসএসসি পাশও করেছেন। আরেকবার এক নম্বরের জন্য আটকে গিয়েছেন। কিন্তু এখনও চাকরি হয়নি তাঁর। ভিক্ষা করে দিন গুজরান করতে চান না। তাই চাকরির দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে মালদহ থেকে সোজাসুজি হুইলচেয়ারে নবান্নের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন নিখিল সরকার।
শারীরিকভাবে বিশেষ সক্ষম তিনি, কিন্তু মানসিক জোর অটুট। তারই জীবন্ত উদাহরণ মালদহের বাসিন্দা নিখিল সরকার। এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করা ও একবার টেট পরীক্ষায় এক নম্বরের জন্য পাশ করতে পারেননি নিখিল। এই বছরই সরকারি চাকরি পাওয়ার শেষ বছর নিখিলের। বাড়িতে এক দিদিকে সঙ্গেই থাকেন নিখিল। ছোটো থেকেই নিখিলের দুটি পা সচল না হওয়ায় হুইল চেয়ারই তাঁর ভরসা। পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী নিখিল। কখনই চান না জীবন নির্বাহের জন্য ভিক্ষাবৃত্তির পথ বেছে নিতে।
এই কারণেই তিনি একটা চাকরি চান। নিখিল বলেন, “আমার এখন একটাই স্বপ্ন। চাকরিটা লাগবে। আমি কারোর মুখাপেক্ষী হয়ে বাঁচতে পারব না। দিদিকে একবার সামনাসামনি দেখতে চাই। দিদিকেই বলতে চাই।” শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও মনের জোর নিয়েই কত ২৭শে নভেম্বর মালদহের মন্দাই গ্রাম থেকে নবান্নের উদ্দেশ্যে রওনা দেন দিদির কাছে একটা চাকরির আবেদন নিয়ে। তাঁর একটি চাকরির খুব প্রয়োজন এবং সেই চাকরির আবেদনই তিনি আজ দেখা করতে চান। অবশ্য এখন একটাই প্রশ্ন। আদৌ তিনি তাঁর দাবি নিয়ে নবান্ন পর্যন্ত পৌঁছতে পারবেন কিনা।