
হাওড়া: মেট্রো স্টেশনের মধ্যে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। জ্ঞান হারিয়েছিলেন তিনি। তারপরই মর্মান্তিক পরিণতি। মেট্রো স্টেশনেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন তিনি। এরপরই অভিযোগ উঠতে শুরু করে, মেট্রো স্টেশনে আপতকালীন চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। মৃতের নাম বিশ্বজিৎ পাকরাশি (৫১)। যদিও, অভিযোগ উড়িয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার সকাল ৯:৩০ নাগাদ ত্রিবেনী থেকে লোকাল ট্রেনে করে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছন ওই ব্যক্তি। মেট্রো করে বিদ্যুৎভবনে যাচ্ছিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, তিনি রাজ্য সরকারি কর্মচারি। তবে আচমকাই মেট্রো স্টেশনের লিফটের কাছে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন তিনি। যে সময় ঘটনাটি ঘটেছে তখন অফিসের ব্যস্ত সময় চলছিল। হাজারো মানুষের মধ্যে কয়েকজন যাত্রী ও কয়েকজন মেট্রো রেলের নিরাপত্তা কর্মীর বিষয়টি নজরে আসে। সেই সময় সেখানে উপস্থিত হন তারই সহকর্মী সঞ্জয় চক্রবর্তী।
তাঁর অভিযোগ,প্রাথমিক পর্যায়ে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তিনি চেঁচামেচি করায় প্রায় মিনিট পনেরো পর একটি ঘরে চিকিৎসার জন্য বিশ্বজিতবাবুকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অক্সিজেন থাকলেও ছিল না অক্সিজেন দেওয়ার জন্য মাস্ক বলে অভিযোগ। বিশ্বজিৎ বলেন, “ওদের ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ। মেট্রো কর্তৃপক্ষ কোটি-কোটি টাকা রোজগার করছে। অথচ এত লোক যাতায়াত করছে তাঁদের সুরক্ষার দিকটা দেখতে তো হবে? যখন ওই ব্যক্তির অবস্থা এতটা শোচনীয়, সেই সময় ওকে তাৎক্ষনিক চিকিৎসার জন্য আমরা অক্সিজেন দেওয়ার কথা বলি। গিয়ে দেখলাম অক্সিজেন সিলিন্ডার তো আছে। কিন্তু মাস্ক নেই।”
এমনকী, হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য তাদের কাছে ছিল না কোন অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা, একটি প্রাইভেট গাড়ি করে ঘটনা ঘটার ৪৫ মিনিট পরে তাদের পাঠানো হয় হাওড়া জেলা হাসপাতালে । ততক্ষণে সবকিছু শেষ হয়ে গিয়েছে । হাওড়া জেলা হাসপাতালে চিকিৎসক তাদের সহকর্মী বিশ্বজিৎ প্রামাণিককে পথেই মৃত্যু হয়েছে বলে জানান। আর এই ঘটনার পরেই বড়সড়ো প্রশ্ন উঠছে মেট্রো রেলের আপৎকালীন নিরাপত্তা বা চিকিৎসা নিয়ে।
হাওড়া স্টেশনে মত গুরুত্বপূর্ণ মেট্রো স্টেশনে যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন কেন সেখানে কোন রকম প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। যদি তা থাকত তাহলে হয়ত তাদের সহকর্মীকে বাঁচানো সম্ভব হতো। তবে গোটা বিষয় নিয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনা ঘটার পরবর্তী মুহূর্তেই ওই যাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে সেখান থেকে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এক্ষেত্রে তাদের কোনও রকম গাফিলতি বা বিলম্ব হয়নি।