
হাওড়া: হাওড়া ময়দান এলাকার রামেশ্বর মালিয়া ফাস্ট বাই লেনের বাসিন্দা পিন্টু শর্মা। তাঁর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁর বাড়িতে হাজির হন চারজন ব্যক্তি। তাঁদের পরনে ছিল সাধুর পোশাক, মাথায় তিলক, হাতে ও গলায় রুদ্রাক্ষের মালা। তাঁদের সঙ্গে হনুমানজি ও শিবের মূর্তিও ছিল। দেখেই বোঝা যাচ্ছে এরা সবাই সাধু।
ওই চারজন বাড়ির মহিলাদের ডেকে বিভিন্ন ধর্ম উপদেশ দিতে শুরু করেন। একইসঙ্গে নানারকম ভবিষ্যদ্বাবাণীও করতে থাকেন তাঁরা। পিন্টু শর্মার স্ত্রী মমতাদেবী জানান, ওরা এমনভাবে কথা বলছিল যে তাতে তিনি সম্মোহিত হয়ে যান। শর্মা পরিবারের সদস্যরা এতটাই মগ্ন হয়ে যান যে সোনার গয়না দেওয়া শুরু করেন তাঁরা। পিন্টু শর্মার স্ত্রী নিজের সোনার হার এবং সোনার মঙ্গলসূত্রও খুলে দিয়ে দেন সাধুদের হাতে।
সেগুলো কাপড়ের মধ্যে মুড়ে রেখে ঘরের পূর্বকোণে রেখে দিতে বলেন ওই সাধুরা। বলেন, সন্ধ্যায় ওই কাপড় খুললে সোনার গয়না নাকি দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এরপরই ওই চারজন সাধু বাড়ি থেকে চলে যান।
সন্ধ্যা নামে। বাড়ির সবাই ছুটে যান ঘরের পূর্বকোণে। কাপড় খুলে দেখতে যান গয়না ডবল হয়ে গেল কি না। কিন্তু কাপড়টা খুলতেই চোখ কপালে। কোথায় হার, কোথায় মঙ্গলসূত্র! সব ফাঁকা। সাধুর বেশে আসলে কারা এসেছিল, বুঝতে বাকি থাকে না কারও।
এই ঘটনায় হাওড়া থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন পিন্টু শর্মা। তদন্তে নেমে হাওড়া থানার পুলিশ এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করতে শুরু করে। হাওড়া ময়দানের বঙ্গবাসী মোড় থেকে একটি সাধুর দলকে বাসে উঠতে দেখা যায়। এই সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে পুলিশ খবর পায় দক্ষিণেশ্বর এলাকায় বেশ কিছুদিন আগে একটি বানজারা দল থাকছে। তারাই নাকি সাধু সেজে বিভিন্ন জায়গায় অপরাধ ঘটিয়ে বেড়াচ্ছে!
রাতে হাওড়া থানার একটি তদন্তকারী দল বানজারাদের গোপন ঘাঁটিতে পৌঁছে যায়। দক্ষিণেশ্বর থানার পুলিশের সহযোগিতায় সোনার হার এবং সোনার মঙ্গলসূত্র উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় গ্রেফতার চার দুষ্কৃতী।