উলুবেড়িয়া: রাতবিরেতে বাবার ঘরে ঢুকতেন স্ত্রী। একাধিকবার সে দৃশ্য নিজেই দেখেছিলেন যুবক। কয়েকবার এই নিয়ে স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাও করেছিলেন। কিন্তু সন্তোষজনক কোনও উত্তর পাননি। আবার বাবার গতিবিধিও সন্দেহজনক ছিল। স্ত্রীর সঙ্গে বাবার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহ করতেন ছেলে। বাবার সঙ্গে স্ত্রীর সম্পর্কের রসায়ন হাতেনাতে ধরতে ঘরে সিসিটিভি ক্যামেরাও বসান। আর সেই সন্দেহের বশেই বাবাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার উদয়নারায়নপুর বায়ড়া কুরচি গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম ভূতনাথ ঘোড়ুই (৫৬)। বাবাকে খুন করে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করলেন ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে , উদয়নারায়নপুর বায়ড়া কুরচির বাসিন্দা বিনয় ঘোডুই৷ ছেলেকে দেখাশোনা করেই বিয়ে দিয়েছিলেন ভূতনাথ। কিন্তু পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীকে সন্দেহ করতেন বিনয়। তাঁর মনে হত, বাবার সঙ্গেই স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। স্ত্রী যখনই শ্বশুরের ঘরে ঢুকতেন, তখনই এই নিয়ে অশান্তি শুরু করতেন বিনয়। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতেন।
পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, এই নিয়ে বিনয়কে তাঁরা একাধিকবার বুঝিয়েছিলেন। সম্প্রতি সেই সন্দেহ মারাত্মক আকার নেয়। বিনয়ের একটি বাইক ছিল। বাবার ঘরে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাবেন বলে সেই বাইকও বিক্রি করে দেন বিনয়। সেই বাইক বেঁচার টাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগান বাবার ঘরে।
তবুও তাঁর সন্দেহের নিরসন হয়নি। রবিবার রাতে ভূতনাথ নিজের ঘরেই ঘুমিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় তাঁর ঘরে ঢোকেন বিনয়। ধারাল অস্ত্র দিয়ে বাবাকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকেন। রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানা থেকে মাটিতে পড়ে ছটফট করতে থাকেন তিনি।
ভূতনাথের আর্তনাদ শুনে পরিবারের বাকি সদস্যরা ছুটে আসেন। ততক্ষণে দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যান বিনয়। সোজা পৌঁছে যান থানায়। কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের কাছে গোটা বিষয়টি খুলে বলেন। উদয়নারায়ণপুর থানার পুলিশ বিনয়ের বাড়িতে এসে ভূতনাথের দেহ উদ্ধার করে। অভিযুক্ত বিনয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।