
উলুবেড়িয়া: পড়ুয়াদের নিয়ে সোজা পুকুরে ডুবে যায় পুলকার। ভিতরে থাকা পড়ুয়াদের বের করতে হিমশিম খেতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। তিনজনকে যখন বের করা হয়, ততক্ষণে সব শেষ। সোমবারের এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন উঠছে। প্রশ্ন উঠেছে, ক্ষুদে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি খতিয়ে দেখতেই উঠে এসেছে বিস্ফোরক তথ্য। না ছিল বিমা, না ছিল দূষণের ছাড়পত্র।
যে গাড়িটি পুকুরে পড়ে যায়, সেটি ২৩ বছরের পুরনো একটি গাড়ি। ২০১৮-তে ফিটনেস ফেল করে গাড়িটি, বিমার মেয়াদ ফুরিয়ে যায় ২০২২-এ। দূষণের ছাড়পত্রও ছিল না। অভিভাবকরা বলছেন, গাড়িটিতে প্রবল শব্দ হচ্ছিল। লক ঠিক মতো খোলা যাচ্ছিল না। পুকুরে ডুবে যাওয়ার পর লকটা যদি খোলা যেত, তাহলেও হয়ত শিশুদের বাঁচানো সম্ভব হত বলে মনে করছেন অভিভাবকরা।
ওই গাড়িতেই বাড়ি ফেরে এক ছাত্রী। সে নেমে যাওয়ার পর, তার চোখের সামনেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। ছাত্রীর মা বলেন, “শরীর খারাপ সত্ত্বেও আসছিল ওই চালক। গাড়িটায় খুব আওয়াজ হচ্ছিল। লক খোলা যাচ্ছিল না। আমি সকালেই বলেছিলাম, কেন এই গাড়ি নিয়ে আসছেন? খুব সাবধানে চালাবেন।“
স্কুলের এক কর্ণধার বলেন, “এই ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত। কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলার মতো ভাষা নেই।“ তিনি আরও জানান, গাড়িগুলি অভিভাবকরাই ঠিক করে। স্কুলের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু অভিভাবকরা বলছেন অন্য কথা। তাঁদের দাবি, স্কুলই গাড়ি ঠিক করে। তাঁরা শুধু টাকাটা চালককে দেন।
সোমবার গভীর ওই পুকুরে নেমে যায় গাড়িটি। একেবারে মাঝ বরাবর জলে ডুবে যায়। পাঁচ পড়ুয়াকে বের করা সম্ভব হলেও তিনজনকে বাঁচানো যায়নি। গাড়ি যার দায়িত্বেই থাকুক না কেন, পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে।