
হাওড়া: হাঁটাচলার শক্তি হারিয়েছেন স্ত্রী। অশীতিপর স্বামীও শরীরেও সেই শক্তি নেই যে স্ত্রীকে পাঁজাকোলা করে তুলে ঘরের বাইরে নিয়ে যাবেন। এদিকে তখন দাউদাউ করে জ্বলছে আস্ত বাড়ি। যে ঘরের স্ত্রী রয়েছেন তার সামনেই থ দাঁড়িয়ে ৮০ বছরের নীতেন্দ্রনাথ রায়। স্ত্রী রমা রায়ের মুখেও আতঙ্কের ছাপ। কী করবেন, কীভাবে বাঁচবেন আগুনের করালগ্রাস থেকে তা ভেবেই ততক্ষণে ভয়ে সিঁটিয়ে গিয়েছেন দু’জনেই। শেষ প্রতিবেশীদের তৎপরতাতেই বাঁচল বৃদ্ধ দম্পতির প্রাণ। শুক্রবার চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা দেখা গেল ঘুশুরির ধর্মতলায়।
সুড়ির ধর্মতলা লেনের একটি তিনতলার ফ্ল্যাটে থাকতেন ওই বৃদ্ধ দম্পতি। সঙ্গেই থাকে একটি কুকুর। শারীরিক অসুস্থতার কারণে হাঁটাচলা করতে পারেন না তাঁর স্ত্রী রমা রায়। এখনও তাঁর দেখাশোনা করেন বৃদ্ধ নিজেই। পুলিশ সূত্রে খবর শুক্রবার দুপুর বারোটা নাগাদ তাঁদের ফ্ল্যাটে আচমকা আগুন লেগে যায়। গলগল করে ধোঁয়া বেরতে থাকে ফ্ল্যাট থেকে। এদিকে ততক্ষণে চেঁচাচে শুরু করেছে কুকুরটা। পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাচ্ছে দেখে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তাঁরাই পাঁজাকোলা করে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে ফ্ল্যাটের বাইরে নিয়ে যান। প্রাণে বেঁচে যায় কুকুরটিও। প্রতেবেশীরাই ফ্ল্যাটে ঢুকে প্রথমে রান্নাঘর থেকে গ্যাসের সিলিন্ডার বের করে দেন। না হলে আরও বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো বলে মনে করা হচ্ছে।
ততক্ষণে খবর চলে গিয়েছে দমকলে। খবর পাওয়া মাত্রই দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। তবে ফ্ল্যাটের শোওয়ার ঘর এবং ডাইনিং রুমের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। নীতেন্দ্রনাথ রায় বলছেন, ইলেকট্রিক্যাল সুইচ বক্স থেকেই আগুন লেগেছে। তিনি ওখানেই প্রথম ধোঁয়া দেখতে পেয়েছিলেন।