ইসলামপুর: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ডাকা ‘মেগা’ বৈঠকে গরহাজির ইসলামপুরের বিধায়ক (TMC MLA) আব্দুল করিম চৌধুরী। বলা ভাল, সভানেত্রীর ডাকা বৈঠক বয়কট করলেন ইসলামপুরের বিদ্রোহী বিধায়ক। রাজ্য কমিটির সভাপতি সুব্রত বক্সির ইস্তফা দেওয়ার প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ হয়েই তিনি বৈঠক বয়কট করলেন বলে জানিয়েছেন। এমনকি যাঁকে দেখে দলে এসেছেন, সেই দলনেত্রী গত চার-পাঁচ ধরে কথা বলেননি বলেও আক্ষেপ প্রকাশ করেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক (Abdul Karim Chowdhury)। যদিও আব্দুল করিম চৌধুরীর মন্তব্যে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব।
দলীয় নেতৃত্বের তরফে এদিনের বৈঠকে ডাক পেয়েছিলেন করিম?
ইসলামপুরের বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী জানান, দলের তরফে কোনও পরিচিত নেতা তাঁকে ফোন করেননি। একজন অপরিচিত ব্যক্তি তাঁকে ফোন করে এদিনের বৈঠকের কথা জানিয়েছিলেন। তবে তিনি সেই ফোন ধরেননি। তাঁর ছেলে ইমদাদ চৌধুরী সেই ফোন ধরেন এবং বৈঠকে না যাওয়ার বিষয়ে তাঁর মতামত জানিয়ে দেন।
ইসলামপুরের তাঁর বিরোধী লোকদের দলের নেতৃত্বে আনা হচ্ছে এবং তাঁদের পরিবর্তনের প্রস্তাব দিলে সুব্রত বক্সি তাঁকে ইস্তফা দেওয়ার প্রস্তাব দেন বলে অভিযোগ করিম চৌধুরীর। আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, “দীর্ঘ ৫৫ বছর ধরে রাজনীতি করার এখন পর সুব্রত বক্সির কাছে তাকে শুনতে হচ্ছে ব্যাক্তি বড় নয়, দল বড়। ইস্তফা গিয়ে দিন।” এপ্রসঙ্গে তিনি সুব্রত বক্সিকে ‘বেলাগাম লোক’ বলতেও ছাড়েননি। এমনকি এই ঘটনায় দলনেত্রীও কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন করিম চৌধুরী।
তৃণমূল বিধায়কের আরও অভিযোগ, দীর্ঘ চার-পাঁচ বছর যাবত মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কোনও কথা হয় না। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে কোনরকম কুশল বিনিময়ও করেননি। তাই এদিন কালীঘাটের বৈঠকে যাননি ইসলামপুরের বিধায়ক। তবে দল ছাড়বেন না, বিধায়ক হিসাবে তিনি নিজের এলাকায় কাজ করে যাবেন বলেও জানিয়েছেন আব্দুল করিম চৌধুরী। তাঁর কথায়, “বিধায়কদের নিজের এলাকায় কাজ করতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আমি তাই করব। আমি অন্য দলে যাব না। বিদ্রোহী বিধায়ক হিসাবেই দলে থাকব।”
তবে আব্দুল করিম চৌধুরীর মন্তব্যে যে দল গুরুত্ব দিচ্ছে না, তা এদিন স্পষ্ট করে দেন বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। কালীঘাটে মেগা বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠকে ইসলামপুরের বিধায়কের গরহাজির এবং তাঁর মন্তব্য প্রসঙ্গে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূল অনেক বড় দল। সেখানে কে, কী বিচ্ছিন্ন মন্তব্য করল, সে ব্যাপারে দল গুরুত্ব দিতে নারাজ।”
প্রসঙ্গত, এদিন দুপুরে কালীঘাটে নিজের বাসভবনে মেগা বৈঠক করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের সমস্ত বিধায়ক, সাংসদ, জেলা সভাপতি এবং চেয়ারম্যানদের এই বৈঠকে ডাকেন তিনি। পঞ্চায়েত ভোটের রণকৌশল স্থির করতেই এই বৈঠক বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।