জলপাইগুড়ি: রাজ্যের সরকারি অফিসগুলি (Government Offices) সম্পর্ক সাধারণ মানুষের একাংশের মনে এখনও বিরূপ ধারণা রয়ে গিয়েছে। এবার তাই সরকারি অফিসগুলির কর্মসংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে নবান্ন। গত শনিবার নবান্ন (Nabanna) থেকে এক নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, আগাম অনুমতি ছাড়া অফিসের সময়ে অফিস থেকে বেরিয়ে যেতে পারবেন না। এমনকী টিফিনের সময়েও টিফিন করা ছাড়া, অন্য কোনও কাজ করা যাবে না বলে নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে দিয়েছে নবান্ন। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, সরকারি কর্মচারীদের একাংশ যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে, সেটিকে কড়া হাতে দমন করতেই এই পদক্ষেপ করছে রাজ্য সরকার। আর এরই মধ্যে সরকারি এই ‘ফতোয়া’র বিরুদ্ধে সরব হচ্ছে বামপন্থী সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলি। সরকারি এই নির্দেশিকা বাতিলের দাবিতে শুরু হয়েছে আন্দোলন।
রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক মনোজিৎ দাসের বক্তব্য, তারা সম্প্রতি কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘভাতা, শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ, অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণ সহ আরও একাধিক দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন। বলছেন, ‘সরকারি কর্মচারীদের ক্ষোভ ক্রমেই পুঞ্জীভূত হচ্ছে। সেই লড়াই আন্দোলনকে দমন করে ভয়-ভীতির পরিবেশ তৈরি করার জন্য এই ধরনের অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরতান্ত্রিক আদেশনামা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে ভারতের সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারে রাশ টানার চেষ্টা করা হচ্ছে।’ কো-অর্ডিনেশন কমিটির জেলা সম্পাদক জানাচ্ছেন, এই নির্দেশিকার বিরোধিতা করে এবং সার্কুলার বাতিলের দাবিতে রাজ্যজুড়ে টিফিন বিরতিতেই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের একাধিক সংগঠন বকেয়া মহার্ঘভাতার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তৈরি হয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। অনশন, অবস্থান, পেনডাউন, ধর্মঘট… বিভিন্ন কর্মসূচি ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে আন্দোলনরত সরকারি কর্মচারীদের পক্ষ থেকে। এদিকে রাজ্য সরকারও শুরু থেকেই কড়া। পেনডাউন বা ধর্মঘটের দিনগুলিতে সরকারি অফিসে কর্মচারীদের হাজিরা নিশ্চিত করতে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আন্দোলনের ঝাঁঝ তাতে কমানো যায়নি।
নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের (ABPTA ) জেলা সম্পাদক বিপ্লব ঝাঁ বলেন, ‘টিফিন পিরিয়ডে আমরা সাধারণত আমাদের মতো করে সময় কাটাই কিংবা প্রতিবাদ আন্দোলন করে থাকি। আমরা যাঁরা ট্রেড ইউনিয়ন করি, আন্দোলন করা আমাদের অধিকার। এখন সেটাতেও বাধা দিচ্ছে সরকার। যা আমরা কোনও ভাবে মানব না। তাই এই প্রতিবাদ আন্দোলন।’