জলপাইগুড়ি: ভারতের পকসো আইনে সাজা পেয়ে শ্রীঘরে গেল বাংলাদেশের এক যুবক। এক নাবালিকাকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। ২০১৭ সালের ঘটনা। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছিল। সেই মামলার বিচার চলছিল এতদিন ধরে। এবার সেই মামলায় শাস্তি পেলেন আমির সোহেল নামে ওই যুবক।
২০১৭ সালে রাজগঞ্জ থানা এলাকার একটি বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতে এসেছিল আমির সোহেল। সেই সময় তিনি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিল বলে অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, ভুল নাম বলে স্থানীয় এক নাবালিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় ওই যুবক। এরপর তাকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে পালিয়ে চলে যায় কোচবিহার জেলার দিনহাটা এলাকায়। সেখানে নাবালিকার সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে বলেও অভিযোগ।
এরপর ওই নাবালিকা কোনওমতে বাড়িতে ফোন করে সব খুলে বলে। মেয়ে হারিয়ে যাওয়ার পর পরিবার রাজগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল। পুলিশ খবর পেয়ে দিনহাটায় দুজনকে নিয়ে আসে। এই ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলা হয়। শুরু হয় বিচার। বুধবার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন জলপাইগুড়ি পকসো আদালতের বিচারক রিন্টু সুর।
পকসো আদালতের সরকারি আইনজীবী দেবাশিস দত্ত উল্লেখ করেন, অভিযুক্ত একদিকে নিজের পরিচয় গোপন করে নিজেকে হিন্দু বলে পরিচয় দিয়ে নাবালিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে অন্যদিকে তাকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে চলে যায় দিনহাটায়। সেখানে একটি গোপন ডেরায় রেখে দিয়ে একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করে। এরপর তাকে পাচারের উদ্দেশে বিভিন্ন যায়গায় ফোন করতে থাকে বলেও অভিযোগ আইনজীবীর। নাবালিকা আড়ি পেতে সব শুনে ফেলেছিল। এরপর তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে রাজগঞ্জ থানার পুলিশ তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একইসঙ্গে পকসো ও অবৈধ অনুপ্রবেশ- এই দুই আইনে মামলা রুজু হয়। মামলা চলাকালীন ১০ জন সাক্ষ্য দেন। উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আজ অভিযুক্তকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক রিন্টু সুর। সেই সঙ্গে ২০ হাজার টাকার জরিমানা ধার্য করা হয়েছে, অনাদায়ে আরও ২ মাস জেলের নির্দেশ। নাবালিকাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। সাজা শেষ হলে ওই যুবককে বাংলাদেশে পুশ ব্যাক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।