
জলপাইগুড়ি: ফ্রক পরে রাস্তায় বসে আছে ওরা। হাতে ঝান্ডা। সংবাদমাধ্য়মের বুম এগোতেই হেসে ফেলে। পুলিশ যখন ব্যারিকেড করে মিছিলটা আটকানোর চেষ্টা করছে, তখন ওই ক্ষুদে পড়ুয়ারা কিছুটা না বুঝেই এগিয়ে চলেছে মিছিলের সঙ্গে। ‘কেন এসেছ এখানে?’ কোনওরকমে ভাঙা ভাঙা উত্তর শোনা যায় তাদের মুখে। ‘কোন দলের সঙ্গে এসেছ?’ প্রশ্ন করতেই এদিক-ওদিক তাকায় তসলিমা। এমনই ছবি দেখা গেল জলপাইগুড়ির মিছিলে।
স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত ফি-র থেকে বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে, স্কুলের পরিকাঠামোয় রয়েছে খামতি, জেলা জুড়ে ড্রপ আউটের সংখ্যা বাড়ছে, মাধ্যমিকে জেলার ফল লাগাতার খারাপ হচ্ছে-, এমনই ৯ দফা দাবিকে সামনে রেখে ১২ /১৩ বছর বয়সী পড়ুয়াদের নিয়ে মিছিল করল বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই। জেলার বিভিন্ন ব্লক থেকে বাসে করে এনে শহর জুড়ে মিছিল করা হয় ওই পড়ুয়াদের নিয়ে। এরপর ওই পড়ুয়াদের নিয়ে শুক্রবার বিকেলে জলপাইগুড়ি ডি আই অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় এসএফআই। আর এই ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হল সংগঠনকে।
আইনজীবী মহলের বক্তব্য, এরা শিশু। এদের এখনও বোধ-বুদ্ধি হয়নি। এদের উস্কানি দিয়ে যদি কেউ কিছু করে, এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না কেউ কেউ। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে। তাদের বক্তব্য SFI-এর সংগঠন নেই বলেই ললিপপ দেখিয়ে আন্দোলনে নামানো হয়েছে এই শিশুদের।
স্কুল বাদ দিয়ে কেন ছোট বাচ্চাদের নিয়ে আন্দোলন করা হল, সেই বিষয়ে এসএফআই-এর কাছে জবাব তলব করেছে ডিআই। এসএফআই নেতৃত্বের দাবি তারা কোনও রাজনৈতিক সংগঠন নয়। তাদের সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ক্লাস সিক্স থেকেই সদস্য পদ দেওয়া যায়। তাদের আরও দাবি, কয়েকজনের বয়স ছিল ১২-র কম। কারণ তাদের বাবা মা চা শ্রমিক। সবাই কাজে গিয়েছে। ওদের দাদা দিদিরা আন্দোলনে এসেছে। তাই দাদা-দিদিদের সঙ্গে এসেছে ওই শিশুরা।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন ডিআই বালিকা গোলে। তিনি এই ইস্যুতে এসএফআই-এর কাছে কারণ জানতে চেয়ে চিঠি দেবেন বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।