Jalpaiguri: সরকারের থেকে প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা পাবেন! আপনার জেলাতেও নেই তো হোসেন আলিরা?

Jalpaiguri: ২০১৮ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন হোসন। এরপর তিনি ঠিকাদারি লাইসেন্স বের করেন। আর তারপর '১০০ দিনের কাজে' ব্যবহৃত বালি,পাথর ইত্যাদি সাপ্লাই করেন। প্রথম-প্রথম সব ঠিক ছিল। 'সাপ্লাই' করে টাকা ও বিল পেয়ে যাচ্ছিলেন।

Jalpaiguri: সরকারের থেকে প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা পাবেন! আপনার জেলাতেও নেই তো হোসেন আলিরা?
হোসেন আলিImage Credit source: Tv9 Bangla

| Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

May 03, 2025 | 3:04 PM

জলপাইগুড়ি: একশো দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র! এই অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দীর্ঘদিন ধরে তা নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ কম হয়নি। কিন্তু দুই সরকারের মধ্যে এই চাপানুউতোরের মাঝে পড়ে গিয়েছেন মহম্মদ হোসেন আলির মতো একাধিক জন। কিন্তু কেন?

জলপাইগুড়ি পাহাড়পুর গ্রামপঞ্চায়েতের বাসিন্দা মহম্মদ হোসেন আলি। বাবা আজিজুল ইসলাম এক সময় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। দিনমজুরি করে যা পেতেন তা দিয়ে খুব কষ্ট করে তিনি তাঁর ছেলে হোসেনকে পড়াশোনা শিখিয়ে ছিলেন। যাতে একই কষ্ট করতে না হয় হোসেনকে।

২০১৮ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন হোসন। এরপর তিনি ঠিকাদারি লাইসেন্স বের করেন। আর তারপর ‘১০০ দিনের কাজে’ ব্যবহৃত বালি,পাথর ইত্যাদি সাপ্লাই করেন। প্রথম-প্রথম সব ঠিক ছিল। ‘সাপ্লাই’ করে টাকা ও বিল পেয়ে যাচ্ছিলেন। এরপর ব্যবসা আরও বড় করার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ ধার করে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকার সামগ্রী ‘১০০ দিনের কাজের’ জন্য সাপ্লাই করেন। কিন্তু সেই টাকা এখনও পাননি বলে দাবি তাঁর। বেকয়া রয়ে গিয়েছে প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা বলে দাবি হোসেনের। গত প্রায় ৪ বছর ধরে এই টাকা তিনি পাচ্ছেন না। আর এতেই মাথায় হাত পড়েছে এই যুবকের।

একশো দিনের কাজে বরাত প্রাপ্ত সংস্থা ‘রুরাল ডেভেলপমেন্ট কন্ট্রাক্টর অ্যসোসিয়েশনের’ তথ্য অনুযায়ী, ১) ১০০ দিনের কাজে জলপাইগুড়ি জেলায় মোট ভেন্ডার ৬৫০ জন। জেলায় মোট বিলের পরিমাণ ৩৫০ কোটি টাকা।

২)রাজ্যে প্রায় ২০ হাজার ভেন্ডার রয়েছেন। মোট বকেয়া ৫৭০০ কোটি টাকা।

৩)প্রায় ৪ বছর ধরে বকেয়া বলে অভিযোগ।

৪) রাজ্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্লক থেকে শুরু করে জেলা হয়ে রাজ্য, সমস্ত জায়গায় এরা যোগাযোগ করেছে। উত্তর কন্যা অভিযান। রাজ্যে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। তবে সুরাহা হয়নি।

৫) কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে জেলায় জেলায় জাতীয় সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন।

৫) পাওনা আদায়ে আগামী ৮ মে কলকাতার রানি রাসমণী রোডে ধরনা কর্মসূচি রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে হোসেন আলি বলেন, “নিত্যদিন পাওনাদারদের অত্যাচার। বকেয়া টাকা চেয়ে ফোনের পর ফোন। বাড়িতে স্ত্রী,ছোট্ট মেয়ে রয়েছে। তাঁদের পেটে ভাত যোগাতে শেষমেশ রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করতে শুরু করতে বাধ্য হলাম। আমি চাই আমার বিল দ্রুত প্রদান করা হোক।” হোসেনের বাবা আজিজুল ইসলাম বলেন, “আমি চাইনি ছেলে আমার মতো রাজমিস্ত্রি হোক। তাই পড়াশোনা শিখে ভেন্ডার লাইসেন্স বার করলাম। ঋণ ধার করে মাল সাপ্লাই করত। কিছুদিন ভালোই পেমেন্ট পেয়েছে। কিন্তু গত ৪ বছর ধরে ২৮ লাখ টাকার বিল বকেয়া।”

‘রুরাল ডেভেলপমেন্ট কন্ট্রাক্টর অ্যসোসিয়েশনের’ জলপাইগুড়ি জেলা সহ সম্পাদক স্মরজিত দাস বলেন, “শুধু এই হোসেন নয়, জলপাইগুড়ি জেলায় তাঁর মতো প্রায় ৬৫০ জন ভেন্ডার আছেন। তাঁরাও ১০০ দিনের কাজের জন্য ইট,বালি,পাথর, রড়,সিমেন্ট ইত্যাদি সরবরাহ করেছিলেন। কিন্তু বছরের পর বছর বিল না পেয়ে পাওনাদারদের তাগাদা খেয়ে বহু সদস্য পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কেউ কেউ হার্ট অ্যাটাক হয়ে মারা গেছেন। কেউ কেউ আবার লোক লজ্জায় এলাকা ছাড়া। কেউ আবার ভেন্ডার থেকে দিনমজুর হয়ে সংসার চালাচ্ছেন। আমরা চাই কেন্দ্র রাজ্য সংঘাত মিটুক। আমাদের বকেয়া টাকা দ্রুত দেওয়া হোক।”

সদর বিডিও মিহির কর্মকার বলেন, “এটা সত্যি। দীর্ঘ সময় ধরে টাকা বকেয়া আছে। কিছু জটিলতার কারণে ওনাদের বকেয়া বিল রয়েছে। আমদের কাছে ফান্ড এলে আমরা পেমেন্ট মিটিয়ে দেব।”