
জলপাইগুড়ি: স্কুল যাওয়ার পথেই ঘটে গিয়েছিল ভয়ঙ্কর ঘটনা। ভয়ে বাড়ি ফিরে মা’কে বলতেও পারেনি অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রী। তারপর ব্যাগ খুলে প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট দেখে চমকে যান মা। এরপর ক্রমে সামনে আসে পুরো ঘটনা। ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয় এক টোটোচালকের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার পাঁচ মাসের মধ্যেই সাজা ঘোষণা করল আদালত।
জলপাইগুড়ির ঘটনা। চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের অষ্টম শ্রেণিতে পাঠরত এক নাবালিকা ছাত্রীকে স্কুলে পৌঁছে দেবে বলে টোটোতে তোলেন তার পরিচিত এক টোটো চালক। ছাত্রীকে নিয়ে স্কুলের পথে রওনাও হয়। কিন্তু ওই টোটো চালক তাকে স্কুলে না নিয়ে গিয়ে মাঝ রাস্তায় মাদক মেশানো চকোলেট খাইয়ে অচৈতন্য করে। এরপর তিস্তা নদীর পারে নিয়ে যায়। একটি ঝুপড়ি ঘরে তাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
নাবালিকার জ্ঞান ফিরলে ওই টোটোচালক তাকে ভয় দেখায়। ওই ঘটনা কাউকে বললে তাকে ও তার মাকে খুন করবে, এমনটাই বলেছিল টোটোচালক। এরপর তাকে বাড়ি পৌঁছে দেয় ওই টোটোচালকই।
বাড়ি পৌঁছনোর পর থেকে ওই ছাত্রী মনমরা হয়ে থাকত। গত ৮ ফেব্রুয়ারি নাবালিকার মা তার স্কুল ব্যাগ গুছোতে গেলে ব্যাগ থেকে একটি প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট উদ্ধার হয়। এরপর মেয়েকে চেপে ধরতেই সব খুলে বলে। ওই কিট টোটোচালক কিনে দিয়েছে বলে জানায় নাবালিকা। সবকিছু জানার পর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নাবালিকার মা।
পকসো (POCSO) আদালতের সহকারী সরকারি আইনজীবী দেবাশিস দত্ত বলেন, অভিযোগ দায়ের হতেই ওইদিন রাতেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। একমাসেরও আগে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী অফিসার। এই মামলায় মোট ১০ জন সাক্ষী ছিলেন। উভয়পক্ষের কথা শোনার পর পকসো আদালতের বিচারক রিন্টু সূর এদিন অভিযুক্তকে ২৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি এক লক্ষ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দু’মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নাবালিকাকে ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নাবালিকার মা জানান, তিনি অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। খুব কষ্ট করে তাঁর মেয়েকে পড়াশোনা করাচ্ছেন। আদালতের রায়ে তিনি খুশি।