
জলপাইগুড়ি: হাইকোর্টের নির্দেশে নতুন ব্যবস্থায় আর পুরনো ছবি ধরা পড়ল না জল্পেশে। ধাক্কাধাক্কি, হুড়োহুড়ি নেই জল্পেশ মন্দিরে। একসময় শ্রাবণ মাসে জল্পেশ মন্দিরে জল ঢালতে গেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দীর্ঘ লাইন দিয়ে টিকিট কেটে গর্ভগৃহে প্রবেশ করতে হত। তারপর ভিড় ঠেলে গিয়ে শিবলিঙ্গে জল ঢালতেন ভক্তরা। গত বছর থেকে এই নিয়ম পাল্টেছে। এখন গর্ভগৃহে প্রবেশ নিষিদ্ধ। এখন আর টিকিট কাটতে হচ্ছে না। তার বদলে চ্যালেন দিয়ে জল ঢালতে হচ্ছে। আর এর ফলে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে না ভক্তদের। হাইকোর্টের নির্দেশে নতুন ব্যবস্থায় খুশি ভক্তরা। একই সঙ্গে মন্দির চত্বরে পুলিশের কড়া নজরদারি এবং আন্তরিকতায় খুশি তাঁরা।
উত্তরবঙ্গ সহ নিম্ন অসমের সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে প্রাচীন শৈব তীর্থক্ষেত্র জল্পেশ মন্দির। শ্রাবণ মাস ভর এই মন্দিরে থাকা শিবলিঙ্গতে জল ঢালতে যান কয়েক লক্ষ শিব ভক্ত। জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি ব্লকের জল্পেশ এলাকায় জর্দা নদীর তীরে অবস্থিত এই মন্দির। উত্তরপূর্ব ভারতের এটি একটি বিশিষ্ট শিব মন্দির। এই মন্দিরের সবজে সাদা রঙের এই শিবলিঙ্গকে অনাদি লিঙ্গ বলা হয়। আর এই কারণেই এই মন্দিরে এত বিপুল পরিমাণ ভক্ত আসেন।
এবছর কোনও রকম ধাক্কাধাক্কি ছাড়া সুশৃঙ্খলভাবে পূজো দিতে পেরে খুশি ভক্তরা। তাঁরা জানালেন, অন্যবারের মতো এবারে পুজো দেওয়ার জন্য কুপন কাটতে হয়নি। আর ভিড় একেবারেই নেই। তাই জল ঢালতে কোনও অসুবিধা হয়নি। পুলিশ প্রশাসন অত্যন্ত সক্রিয়।
জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার উমেশ খান্ডবাহালে জানান, হাইকোর্টের নির্দেশ মতো এবারে মন্দিরের ভেতরে কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তার বদলে এবারে চ্যানেলের মাধ্যমে জল ঢালার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জল ঢালবার পর সবাই জায়েন্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে দেখে নিতে পারছেন জল সোজা শিবলিঙ্গের ওপর গিয়ে পড়ছে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে জল্পেশ মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করতে গিয়ে ভিড়ের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন জলপাইগুড়়ির বাসিন্দা রাজ কুমার দাস নামে এক ব্যক্তি। পরে সুস্থ হয়ে তিনিই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই মামলার প্রেক্ষিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, শ্রাবণ মাসে মন্দিরের ভিতরে ঢোকা যাবে না। বাইরে থেকে চ্যানেলের মাধ্যমে শিব লিঙ্গে জল ঢালতে হবে। বিচারপতির সেই নির্দেশই বহাল থাকল জল্পেশে।