
জলপাইগুড়ি: ময়নাতদন্তের জন্য পাড়ি দিতে হয় ২৫০ কিলোমিটার পথ। ভুক্তভোগীদের জন্য আক্ষেপ তৃণমূল নেতার গলায়। অবিলম্বে স্টেট জেনারেল হাসপাতাল চালু এবং মর্গ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সরব জলপাইগুড়ির মেখলিগঞ্জের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক। আর এই ইস্যুতে তৃণমূলকে খোঁচা মেরে বিজেপির মন্তব্য, তৃণমূলের জমানায় অপঘাতে মৃত্যু হলেও পকেটে ৩০ হাজার টাকা রাখার প্রয়োজন হয়।
কোচবিহার রাজ আমলের চুক্তি অনুযায়ী ১৯০৪ সাল থেকে হলদিবাড়ি গ্রামীন হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হত। চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার পাশাপাশি অপঘাতে মৃত্যু সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘ ১২০ বছরের বেশি সময় ধরে এইসব পরিষেবা পেয়ে আসছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু কোনও এক অজানা কারণে গত এক বছর ধরে হলদিবাড়ি গ্রামীন হাসপাতালে ময়নাতদন্ত বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
বর্তমানে পথ দুর্ঘটনায় বা অন্য কোনও অপঘাতে কারও মৃত্যু হলে তাঁর দেহ নিয়ে ছুটতে হয় কোচবিহারে। প্রায় ১২৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে লাশ নিয়ে যাওয়ার পর বেশিরভাগ সময় ময়নাতদন্ত হয় না বলেও অভিযোগ। ফলে লাশ নিয়ে পরিবারগুলিকে একরাত থেকে তারপর ময়নাতদন্ত করিয়ে ফের ১২৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে হলদিবাড়ি ফিরতে হয়। আর এতেই ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। ক্ষোভ রয়েছে প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক তথা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য অর্ঘ্য রায় প্রধানেরও।
একইসঙ্গে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে উন্নত পরিষেবার দাবিতে হলদিবাড়ির মানুষের দাবি ছিল, এই গ্রামীণ হাসপাতালকে স্টেট জেনারেল হাসপাতালে উন্নীত করার। সেই দাবিকে মান্যতা দিয়ে পরিকাঠামোর কাজ শুরু করেছিলেন এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অর্ঘ্য রায় প্রধান। পরিকাঠামো তৈরি হয়। কিন্তু ওইভাবেই দীর্ঘদিন হাসপাতাল বিল্ডিং ফাঁকা পড়ে থাকে।
অভিযোগ, গ্রামীন হাসপাতালকে স্টেট জেনারেল হাসপাতালে উন্নত না করে সম্প্রতি ওই গ্রামীণ হাসপাতালকে নতুন ভবনে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসা পরিষেবার বিন্দুমাত্র উন্নতি না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকার মানুষ।
মানুষের সমস্যা এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য তথা মেখলিগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক অর্ঘ্য রায় প্রধান। আর এখান থেকে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান উতোর।