
জলপাইগুড়ি: ‘এক রামে রক্ষা নেই, তার উপর সুগ্রীব দোসর’ রাজগঞ্জে এতদিন ইঁদুর জ্বরে কাবু ছিল। কিন্তু এবার একসঙ্গে বেশ কয়েজনের স্ক্রাব টাইফাস সংক্রমণের হদিস মিলছে। এই রোগেরও বাহক ইঁদুর। আর এই রিপোর্ট আসতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ স্বাস্থ্য কর্তাদের। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইঁদুর ধরে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বনদফতরকে চিঠি দিল স্বাস্থ্য দফতর।
রাজগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে মঙ্গলবার চেকর মারি গ্রামের ২২ জনের রক্তের নমুনা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। বুধবার সেই রিপোর্ট আসে। দেখা যায় ৬ জনের দেহে স্ক্রাব টাইফাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে। ইতিমধ্যে আগে দুই দফায় একজন করে মোট দু’জনের দেহে এই সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। কিন্তু এবার একসঙ্গে ৬ জনের দেহে স্ক্রাব টাইফাস ধরা পড়ল।
পাশাপাশি নতুন করে আরও ২ জনের দেহে লেপ্টোস্পাইরা বা ইঁদুর জ্বরের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এই নিয়ে মোট আক্রান্তে সংখ্যা দাঁড়াল ১৭০ জন।
স্ক্রাব টাইফাস আসলে কী?
স্ক্রাবটাইফাস এক ধরনের পতঙ্গ বাহিত রোগ। চিগার বা একধরনের ট্রম্বিকিউলিড মাইটস ( উকুন জাতীয় এক ক্ষুদ্র পোকা) র কামড়ে সংক্রামিত হয় এই রোগ।
এই রোগের লক্ষণ কী?
সাধারণত ওই পোকা কামড়ানোর পর চামড়ার উপর গাঢ় লাল কামড়ের চিহ্ন দেখা যায়। রোগীর খিঁচুনি ও জ্বর হয়। সঙ্গে মাথা ও গায়ে ব্যথা হয়।
যেভাবে ছড়ায় স্ক্রাব টাইফাস
১) চা বাগান কিংবা বন ও বনবস্তি কিংবা ঝোপঝাড়ে সাধারণত এই পোকা থাকে। তাই এইসব জায়গা থেকে এই রোগ সহযেই আসতে পারে।
২) মাটিতে গর্ত খুঁড়ে যেইসব প্রাণিরা থাকে, তাদের মধ্যে ইঁদুর কিংবা ছুঁচোর গায়ে এই পোকা বাসা বাঁধে। সেই ইঁদুর কিংবা ছুঁচো বাড়িতে ঢুকে রান্নাঘর কিংবা শোবার ঘরে ঢুকে জামা কাপড় কিংবা বিছানায় এলে তার থেকেও এই পোকা মানুষের শরীরে আসতে পারে।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাক্তার অসীম হালদার বলেন, “হাসপাতালে চিকিৎসারত কয়েকজনের দেহে বাইট মার্ক দেখে আমাদের সন্দেহ হওয়ায় আমরা তাঁদের ব্লাড স্যাম্পেল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠাই। সেখানে ৬ জনের দেহে স্ক্রাব টাইফাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এই রোগের চিকিৎসা আছে।পাশাপাশি লেপ্টোস্পাইরা আক্রান্তের বাড়ি ও সংলগ্ন এলাকা থেকে ইঁদুরের রক্তের নমুনা সংগ্রহের জন্য আজ বনদফতরকে চিঠি দিলাম।”