
জলপাইগুড়ি: রাজ্য বাজেটে একাধিক ঘোষণা করা হয়েছে চা শ্রমিকদের জন্য। শ্রমিকদের কর ছাড় দেওয়ার পাশাপাশি, মিউটেশন ফি-তে ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য দাবি জানিয়েছেন, চা শ্রমিকদের বাগানের জমির পাট্টা বিলি করা হবে। এই পাট্টা বিলির বিষয়টি নিয়ে চা শ্রমিকদের দাবি দীর্ঘদিনের। আর দাবি মেটানোর আশ্বাসও বারবার দিয়েছে রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার বাজেটে সেই একই বিষয় উঠে আসায় প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি সত্যিই এবার মিটবে দাবি? যদি এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হয়, তাহলে উত্তরবঙ্গের জন্য ভাল খবর আসতে চলেছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা বিশিষ্ট চা শ্রমিক নেতা জিয়াউল আলম এই প্রসঙ্গে বলেন, এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ৫ বার এই কথা বললেন। আগেও একাধিকবার বলেছেন। কিন্তু আদতে তা হয়নি। আগেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তিনি জানান, শ্রমিক পরিবারের ভূমিহীনতার বিষয়টি রাজ্য সরকার দেখবে বলে আগেও আশ্বাস দিয়েছিল। তিনি আরও জানান, পাট্টা বিলি তো দূরের কথা, বছর কয়েক আগে চা বাগানের ১৫ শতাংশ জমি অন্য কাজে ব্যবহার করার উদ্যোগ নেয় প্রশাসন। কিন্তু তাতে বাধা দেন চা শ্রমিকদের একটা বড় অংশ। ফলে পিছু হঠতে হয় সরকারকে।
তাঁর দাবি, পাট্টা পাবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন শ্রমিকেরা। শুধু তাই নয়, প্রোমোটারদের দাপটে চা শিল্প নষ্ট হয়ে যেতে পারে, এমন আশঙ্কাও রয়েছে। তিনি বলেন, ‘চা বাগানের জমি, শ্রমিকদের পূর্ব পুরুষদের জমি। তার অধিকার দ্রুত দিতে হবে শ্রমিকদের।’
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও এদিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘পাট্টা প্রদানের কথা তো বারবারই বলে সরকার। কিন্তু কীভাবে হবে, কবে হবে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও উল্লেখ নেই বাজেটে।’
অন্যদিকে, তৃণমূল চা শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি রাজেশ লাকড়া বলেন, ‘এবার আইনিভাবে শুরু হবে পাট্টা প্রদানের প্রক্রিয়া। আমরা অত্যন্ত খুশি। এটা চা শ্রমিকদের অনেকদিনের দাবি।’ আশ্বাস দিয়েই থেমে যাওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, সেই প্রসঙ্গে রাজেশ লাকড়া বলেন, ‘একবার যখন মন্ত্রিসভায় বলা হয়েছে, তখন এটা বাস্তবায়িত হবেই।’