
জলপাইগুড়ি: প্রেমে বাধা দিয়েছিলেন দাদা। পরবর্তীতে প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যায় অন্যত্র। বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি যুবক। প্রতিশোধ নিয়ে দাদাকে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে খুন। মৃত্যু নিশ্চিত করতে পরের পর ১৮ বার ধারালো অস্ত্রের আঘাত। হৃদপিন্ড,লিভার,কিডনি ছিন্নভিন্ন করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। নৃশংস এই ঘটনারই সাজা শোনাল জলপাইগুড়ি জেলা আদালত। এই হত্যাকাণ্ডকে বিরল থেকে বিরলতম আখ্যা দিয়ে দোষীকে ফাঁসির সাজা দিল আদালত।
জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের ভক্তিনগড় থানার শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা শঙ্কর দাস ও সুরেশ রায়। সম্পর্কে মামাতো-পিসতুতো ভাই। অভিযোগ, সুরেশ তাঁর মামাতো দাদা শঙ্কর দাসের বাড়ির কাছে থাকা একটি মেয়েকে উত্যক্ত করতেন। বিষয়টি নিয়ে মেয়েটির পরিবার শঙ্করকে অভিযোগ করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। এরপর সুরেশকে বকা দেন শঙ্কর। তারপর থেকে যদিও আর উত্ত্যক্ত করেনি সুরেশ।
কিন্তু সমস্য়া তৈরি হল মেয়েটির বিয়ে হয়ে যাওয়ায়। বিষয়টি সুরেশের কানে যেতেই ২০২১ সালের মার্চ মাসে সকাল বেলা দাদা শঙ্কররের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। দুই ভাইয়ের মধ্যে শুরু হয় বচসা। এরপর প্রকাশ্য দিবালোকে দাদাকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। এমনকী, মৃত্যু নিশ্চিত করতে আঠারোবার ওই দেহের উপর আঘাত করে ছিন্নভিন্ন করে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে চলা সেই মামলারই রায় ঘোষণা করে আদালত। এরপর ঘটনার দিন সাজা ঘোষণার সময় আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন মৃতের আত্মীয় ও শান্তিনগর নাগরিক কমিটির সদস্যরা। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন তাঁরা।
ঘটনায় সরকার পক্ষের আইনজীবী শুভঙ্কর চন্দ্র বলেন, “এই মামলায় মোট ১২ জন সাক্ষী দিয়েছেন। উভয় পক্ষ শোনার পর অ্যাডিশনাল থার্ড কোর্টের বিচারক বিপ্লব রায় আজ এই ঘটনাকে বিরল থেকে বিরলতম আখ্যা দেন। অভিযুক্তকে দোষ সাব্যস্ত করে ফাঁসির সাজা দিলেন।”
অপরদিকে, এই মামলায় ডেপুটি চিফ, ডিস্ট্রিক্ট লিগাল এইড ডিফেন্স কাউন্সিল ভানুসিংহ সরকার বলেন, “আমাদের বক্তব্য আদালতের কাছে বলেছি। আদালত অভিযুক্তের ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হব। কারণ এই মামলায় প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে অসঙ্গতি রয়েছে বলে আমরা মনে করছি।”