
ঝাড়গ্রাম: ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল তিনটি হাতির। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রামের বাঁশতলাতে। বন দফতর ও হুলা পার্টির সদস্যরা হাতিগুলিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় জনশতাব্দী এক্সপ্রেসের ধাক্কায় মারা যায় হাতি তিনটি। মৃত তিনটি হাতির মধ্যে একটি পূর্ণ বয়স্ক ও বাকি দুটি শাবক হাতি। এদিকে, হাতিগুলির মৃতদেহ রেললাইনে পড়ে থাকায়, ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত একটা নাগাদ বন দফতর ও হুলা পার্টির সদস্যরা হাতিগুলিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় একটি বয়স্ক হাতি ও দুটি শাবক হাতি বাঁশতলা স্টেশনের পরেই রেললাইনের উপরে উঠে যায়। সেইসময় ঝাড়গ্রাম থেকে খড়্গপুর যাচ্ছিল জনশতাব্দী এক্সপ্রেস। ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে হাতি তিনটি।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন বন দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও রেল আধিকারিকরা। হাতিগুলির মৃতদেহ রেললাইনে থাকায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তড়িঘড়ি বন দফতরের আধিকারিকরা হাতিগুলির মৃতদেহ উদ্ধারের কাজ শুরু করেন। ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার(DFO) উমর ইমাম বলেন, “হাতিগুলি রেললাইনের কাছাকাছি রয়েছে বলে রেলকে রাত ১১টার সময় জানানো হয়েছিল। ট্রেনের গতি কম রাখার কথা বলা হয়েছিল। তারপরও ট্রেনের গতি এত বেশি ছিল।” ওইসময় কোন কোন ট্রেন ওই লাইন দিয়ে গিয়েছিল, তা দেখতে হবে বলে তিনি জানান। ঘটনার তদন্তের পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। ওই এলাকায় প্রায় সারা বছরই হাতি যাতায়াত করে বলে তিনি জানান।
ট্রেনের গতি বেশি থাকার অভিযোগ উড়িয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক সোপান দত্ত বলেন, “খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে ট্রেনের গতি কমই ছিল। বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে ভারতীয় রেল সবসময় অগ্রণী ভূমিকা নেয়।”
এভাবে হাতির মৃত্যু নিয়ে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, সঠিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হুলা পার্টির সদস্য নিয়োগ না করার ফলে একের পর এক হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। বন দফতরের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। ঝাড়গ্রামে বন দফতরের সেভাবে কোনও ভূমিকা দেখা যায় না বলে তাঁদের অভিযোগ। হাতি মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি বন দফতর।
ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় হাতির
অন্যদিকে, এদিন জলপাইগুড়ির ডুয়ার্সে জলঢাকা নদীর চরে একটি পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী হাতির মৃতদেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে মৃতদেহটি দেখতে পান। রাতভর টানা বৃষ্টির পরেছে সকালে নদীর তীরে এমন দৃশ্য দেখে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বন দফতর ও পুলিশ। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, বজ্রপাতে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে হাতিটির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে বন দফতর জানিয়েছে।