Jhargram School: ক্লাসে কথা বলায় বকুনি দেন ইতিহাস শিক্ষক, তাঁকেই ‘শিক্ষা’ দিতে ৯ এমএম পিস্তল-ছুরি নিয়ে হাজির ছাত্র, তারপর..

Jhargram School: এর আগেও বিদ্যালয়ে নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কখনও ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে কটূক্তি, কখনও অশালীন মন্তব্য,এমনকী স্কুলের সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙার মতো ঘটনায় নাম জড়িয়েছে ওই ছাত্রের।

Jhargram School: ক্লাসে কথা বলায় বকুনি দেন ইতিহাস শিক্ষক, তাঁকেই শিক্ষা দিতে ৯ এমএম পিস্তল-ছুরি নিয়ে হাজির ছাত্র, তারপর..
অভিযুক্ত ছাত্র ও ইতিহাস শিক্ষকImage Credit source: Tv9 Bangla

| Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

Aug 19, 2025 | 10:36 PM

ঝাড়গ্রাম: রোজের মতো স্কুল শুরু হয়ে গিয়েছিল। তবে পড়ুয়ারা ক্লাসে জোরে-জোরে কথা বলছিল। তাই তাদের শান্ত করতে ক্লাসে এসেছিলেন ইতিহাস শিক্ষক। তবে অভিযোগ, ক্লাসের বাকিরা শিক্ষকের বকা খেয়ে থেমে গেলেও, থামেনি নীলাঞ্জন দোলুই নামে এক ছাত্র। এরপর সোজা পিস্তল-ছুরি ঢুকল ক্লাসের ভিতর। ইতিহাস শিক্ষককে মারতে উদ্যত হল সে বলে অভিযোগ। কোনওমতে পালিয়ে নিজের প্রাণ বাঁচালেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লবপুর ২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত চোরচিতা চোরেশ্বর হাইস্কুলে।

সোমবার দুপুরে ইতিহাস ক্লাসে দুষ্টুমি করার জেরে শিক্ষকের চড় খেয়ে পিস্তল নিয়ে তাণ্ডব চালাল দশম শ্রেণির ওই ছাত্র। সহপাঠীদের বাধায় অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন শিক্ষক। জানা গিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দা কেষ্ট দোলুইয়ের ছেলে অভিযুক্ত এই ছাত্র নীলাঞ্জন। এর আগেও বিদ্যালয়ে নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কখনও ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে কটূক্তি, কখনও অশালীন মন্তব্য,এমনকী স্কুলের সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙার মতো ঘটনায় নাম জড়িয়েছে ওই ছাত্রের।

এ দিনের ঘটনাটি শুরু হয় দ্বিতীয় পিরিয়ডের ইতিহাস ক্লাসে। শিক্ষক পরিমল অট্ট ক্লাসে শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টা করেন। অভিযোগ, তবে নীলাঞ্জন শিক্ষকের কথা না শুনেই সহপাঠীদের বিরক্ত করতে থাকে। শেষমেশ শিক্ষক তাকে শাসন করতে গালে একটি চড় মারেন। এতে উত্তেজিত হয়ে ছাত্রটি প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ জানাতে যায়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক বিষয়টিকে গুরুত্ব না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ নীলাঞ্জন হুমকি দেয় বাবাকে ডেকে আনার।

এরপর ব্যাগ নিয়ে স্কুল ছাড়ে সে। প্রায় আধঘণ্টা পরে টিফিন পিরিয়ডে ভর্তি ৯ এমএম পিস্তল, ছুরি নিয়ে স্কুল ক্যাম্পাসে ফিরে আসে সে। সিনেমার ভিলেনের মতো শিক্ষককে লক্ষ্য করে দাপাদাপি শুরু করে। ইতিহাস শিক্ষককে দেখে সরাসরি তাঁকে তাড়া করে। সহপাঠীরা বাধা দিলে স্কুল থেকে মাত্র দেড় মিনিট দূরত্বে ওই শিক্ষকের ভাড়া বাড়িতে হাজির হয়।

বাড়ির দোতলায় সেই সময় ছিলেন শিক্ষক পরিমলের স্ত্রী ও তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া তাঁর কন্যা । বন্দুক নিয়ে তাঁদের দিকে এগতে থাকে অভিযুক্ত। তবে সেই সময় স্থানীয় সিভিক ভলান্টিয়াররা উপস্থিত হয়ে অভিযুক্তকে ধরে ফেলে। ঘটনার পর ইতিহাস শিক্ষক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই ছাত্রকে আটক করেছে।

অভিযোগকারী শিক্ষক পরিমল অট্ট বলেন,” আমি ইতিহাস পড়াই। ওই ছেলেটি লাস্ট বেঞ্চে বসেছিল। আর সামনের বেঞ্চের ছেলেকে খোঁচাচ্ছিল। আমি বকা দিই। ওয়ার্নিং দিই। পাঁচ-মিনিট পর দেখি ফের একই কাজ করছে। তারপর আমি ওকে ডাকি। দেখি খাতায় কিছু লেখেনি। পিঠে ওকে এক থাপ্পর মারি। এরপর দেখি ও বলে আমি বাড়ির লোককে ডাকব। আমি বললাম যা ডাক। এরপর দেখি বাড়ি যায়। আমি তখন স্টাফরুমে। কম্পিউটার শিক্ষক বললেন স্যর ওঁর হাতে বন্দুক। আমি ভাবতেই পারিনি। তারপর দেখি ওরই ক্লাসের কয়েকজন ওকে টানা হেঁচড়া করছে। আমরা তখনও ভাবছি ওগুলো খেলনা পিস্তল। এই রকম করতে করতে জানলাম ওটা সত্যিই বন্দুক।”

প্রধান শিক্ষক অন্তর্যামী জানা বলেন, “সিভিক পুলিশরা ওকে ধরে নিয়েছে। ওর বন্ধুরাও ওকে আটকেছে। তবে এই ঘটনা খারাপ। ও কোথা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র পেল জানি না।” অভিযুক্ত ছাত্রের মা বলেন, “আমি কিছু জানি না। আমার শরীর খারাপ। প্রেশার বেড়ে গিয়েছে।”