আসানসোল: ৫ মাস পর শহরে (Asansol) পা দিলেন আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র তথা বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারি। আর শহরে ঢুকতেই তাঁকে গ্র্যান্ড অভ্যর্থনা জানান বিজেপি নেতা-কর্মীরা। রীতিমতো তাসা ব্যান্ড বাজিয়ে, ফুল-মালা দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয় সস্ত্রীক জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে। তাঁকে ঘিরে বিজেপি নেতা ও কর্মীদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। দীর্ঘদিন পর নিজের স্থানে এসে জিতেন্দ্র তেওয়ারিও (Jitendra Tiwari) কিছুটা আবেগঘন হয়ে পড়েন।
আসানসোলে আসার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা গত ১২ সেপ্টেম্বর তুলে নিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। আর তার ঠিক ৮ দিন পরে বৃহস্পতিবার আসানসোলে পা রাখলেন জিতেন্দ্র তেওয়ারি।পূর্ব ঘোষণা মতো এদিন সস্ত্রীক ট্রেনে কলকাতা থেকে আসানসোল স্টেশনে আসেন। তাঁকে সেখানে অভিনন্দন জানাতে উপস্থিত ছিলেন আসানসোল পুরনিগমের কাউন্সিলর গৌরব গুপ্ত সহ প্রচুর বিজেপির নেতা ও কর্মীরা। ট্রেন থেকে নামতেই তাসা ব্যান্ড বাজিয়ে, ফুল-মালা দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। তারপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, “নিজের জন্মস্থান, কর্মস্থল ও বেড়ে ওঠার জায়গায় আসতে কার না ভালো লাগে! একটা দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক কারণে আসানসোলে ঢুকতে বাধা তৈরি করা হয়েছিল। কলকাতা হাইকোর্ট কিছু শর্ত দিয়ে সেই বাধা তুলে নিয়েছে। শর্ত মতো যেখানে আমি থাকব অর্থাৎ আসানসোল দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসারের সঙ্গে ১৫ দিন অন্তর দেখা করতে হবে। আমি তা অবশ্যই করব। এদিন বিকেলেই আমি থানায় যাব।” আসানসোল স্টেশন থেকে জিতেন্দ্র তেওয়ারি সোজা চলে যান আসানসোলের ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া ঘাঘরবুড়ি মন্দিরে পুজো দিতে। পুজো শেষে তিনি আসানসোল শহরের জিটি রোডের গোধূলি মোড় সংলগ্ন নিজের আবাসনে আসেন।
জিতেন্দ্র তেওয়ারির শহরে আসা নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন তরফে দাসু বলেন, “জিতেন্দ্র তেওয়ারির আসানসোলে না আসার বিষয়টি পুলিশ প্রশাসন ও আদালতের। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। আর ফুটপাত দখলমুক্ত করার বিষয়টি আসানসোল পুরনিগমের নীতির ব্যাপার। সময় ও পরিস্থিতি বুঝে তা করতে হয়।”
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর আসানসোলের রেলপারের রামকৃষ্ণ ডাঙালে শিবচর্চার সঙ্গে কম্বল বিতরণের আয়োজন করা হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন জিতেন্দ্র তেওয়ারি। এই অনুষ্ঠানে এসেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি চলে যাওয়ার পরেই কম্বল নেওয়া নিয়ে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। তাতে পদপিষ্ট হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়। মৃত এক মহিলার ছেলের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আসানসোল পুরনিগমের বিজেপি কাউন্সিলারদের দলনেত্রী চৈতালি তেওয়ারি, জিতেন্দ্র তেওয়ারি সহ একাধিক ব্যক্তির নামে মামলা হয়। তারপর গত ১৮ মার্চ দিল্লির অদূরে যমুনা এক্সপ্রেস ওয়ের নয়ডা থেকে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে গ্রেফতার করে। বেশ কিছু দিন জেলে থাকার পরে গত ১০ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্ট থেকে তিনি শর্ত সাপেক্ষে জামিন পেয়েছিলেন। তাঁর আসানসোলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। গত ১২ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট আগের শর্ত শিথিল করে তাঁকে আসানসোলে ঢোকার অনুমতি দেয়। তবে তাকে হাইকোর্টের তরফে এই ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছে। যা তাঁকে মেনে চলতে হবে।