পদ্মাসনে অধিষ্ঠানের জল্পনা ওড়ালেন লক্ষ্মী

লক্ষ্মীর কথায়, "যেটুকু সুযোগ পেয়েছি, কাজ করেছি। আমি খুব সিধা মানুষ।" রাজনীতির বাইরে থেকেও মানুষের সেবা করা যায় বলেই এদিন জানান তিনি।

পদ্মাসনে অধিষ্ঠানের জল্পনা ওড়ালেন লক্ষ্মী
পদ্মাসনে অধিষ্ঠানের জল্পনা ওড়ালেন লক্ষ্মী
Follow Us:
| Updated on: Jan 07, 2021 | 6:22 PM

হাওড়া: রাজ্য রাজনীতির বুকে শোরগোল ফেলে দিয়ে দিন দুয়েক আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা (Laxmiratan Shukla)। তারপর থেকে মুখে কুলুপ এঁটেই ছিলেন। ৪৮ ঘণ্টা পর এদিন সংবাদ মাধ্যমের সামনে এসে হাওড়া জেলা সদরের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি জানিয়ে দিলেন, রাজনীতি থেকে ‘আপাতত’ বিদায় নিচ্ছেন তিনি। খেলাধুলার প্রতি বেশি মনসংযোগ করতে চান। তবে বিধায়ক হিসেবে যে দায়িত্ব নিয়েছেন, তা পূরণ করবেন। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা উড়িয়ে দিলেও তাঁর ‘আপাতত’ বিরতি যে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা জিইয়ে রাখল, তা বলাই বাহুল্য।

এদিন বিকেলে হাওড়ার ডুমুরজলা এলআরএস অ্যাকাডেমিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। বলেন, “রাজনীতি থেকে এই মুহূর্তে আপাতত অব্যাহতি চাইছি। তাই এই সিদ্ধান্ত। তবে বিধায়ক পদ ছেড়ে দিচ্ছি না। এখন বাংলার ক্রিকেটকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। পাশাপাশি মানুষের সেবা করে যেতে চাই।” লক্ষ্মীর কথায়, “যেটুকু সুযোগ পেয়েছি, কাজ করেছি। আমি খুব সিধা মানুষ।” রাজনীতির বাইরে থেকেও মানুষের সেবা করা যায় বলেই এদিন জানান তিনি।

কিন্তু, কী এমন হল যে মন্ত্রিসভা ও জেলা সভাপতির পদ থেকে একযোগে পদত্যাগ করলেন? প্রশ্ন সযত্নে এড়িয়ে গিয়ে বাংলা রঞ্জি দলের প্রাক্তন অধিনায়ক জানিয়ে দেন, কিছু জিনিস নিজের ভিতরেই রাখতে হয়। তবে কারোর প্রতি তাঁর কোনো ক্ষোভ-অভিমান নেই। সূত্রের খবর, গত শুক্রবারই সুব্রত বক্সীর কাছে তিনি ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছিলেন। তারপরই সৌরভের অসুস্থ হওয়ার খবর পেয়ে তাঁকে দেখতে ছোটেন প্রাক্তন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী।

মন্ত্রী অরূপ রায় তাঁর ইস্তফা প্রসঙ্গে বলেছিলেন, “এটা সেনাপতির যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যাওয়ার মত ঘটনা।” এই নিয়ে লক্ষ্মী বলেন, সকলের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা রয়েছে। তবে দল ছাড়ার ঘটনা তাঁর একান্তই ব্যক্তিগত। তাঁর কথায়, “বাংলার জন্য ২০ তলা থেকে ঝাঁপ দিতে হলেও ঝাঁপ দেব।”

আরও পড়ুন: ‘কয়লা চোর, গরু চোরের কথার জবাব দিই না’, কৈলাসের নিশানায় কি অভিষেক?

প্রসঙ্গত, লক্ষ্মী দল ছাড়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি নিয়ে বেশি জলঘোলা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন। সঙ্গে বলেন, “লক্ষ্মী ভাল ছেলে। সবরকম পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক এই বিষয়ে আমার কাছে চিঠি এসেছে। রাজ্যপালকে ইস্তফা গ্রহণ করতে বলেছি। খেলার জন্যই রাজনীতি ও ছাড়তে চায়। ও খেলাতে বেশি মনোযোগ দিতে দিতে চায় বলে চিঠিতে জানিয়েছে।” পাল্টা এদিন দলত্যাগী নেতা দলনেত্রী সম্পর্কে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার ভালই সম্পর্ক থাকবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মানুষ জিতিয়েছিলেন। ময়দানে যে ভাল খেলে সে জেতে। সব বিষয়ে পলিটিক্স খুঁজবেন না।”

সাংবাদিক বৈঠকের পর নিজের অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণরত ক্রিকেটারদের কিছুটা সময় দেন তিনি। রাজনীতির চাপ কাটিয়ে এদিন অনেকটা খোশ মেজাজেই দেখা যায় লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়ানো বা অন্যদলে যাওয়ার চিন্তাভাবনা এই মুহূর্তে নেই বললেও যথেষ্ট রাজনৈতিক প্রশ্নচিহ্ন এদিন রেখে দিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: ‘ধর্মের চেয়ে বড় জীবনের অধিকার’, গঙ্গাসাগর মেলায় ‘ফুল স্টপ’ দিতে পারে হাইকোর্ট