মালদহ: অবশেষে কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন ১০৮ বছরের বৃদ্ধ। যদিও, পরিবারের দাবি তাঁর বয়স ১০৪ বছর। মোট কথা শতবর্ষ পার করেছেন অনেক আগেই। এখন বাড়ি ফিরে বাগান করবেন। ১০০ বছর বয়সের কয়েদি।
দীর্ঘ ছত্রিশটা বছর সংশোধনাগারে কাটিয়েছেন মালদহের বাসিন্দা রসিক মণ্ডল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অবশেষে মঙ্গলবার মুক্তি পেলেন শতায়ু ওই বৃদ্ধ। পরিবারের দাবি, তাঁর বয়স ১০৪ বছর। আধার কার্ডে দেওয়া তথ্য তেমনটাই বলছে। তবে বৃদ্ধ নিজে বলছেন, তার বয়স ১০৮ হবে! তার মধ্যে অনেকগুলো বছর কেটেছে ‘লৌহকপাটের’ আড়ালে।
সালটা ১৯৮৮। তারিখ ৮ নভেম্বর। রাতের অন্ধকারে বাড়িতে ঢুকে রসিকের ভাই সুরেশ মণ্ডলকে গুলি করে খুন করা হয়। সেই সময় জমি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিবাদ চলছিল। সুরেশের পরিবারের দাবি, রসিকই খুন করেছেন ভাইকে। মানিকচক থানায় রসিক-সহ বেশ কয়েক জনের নামে খুনের অভিযোগে মামলা রুজু হয়। রসিকের সঙ্গে মথুরাপুরের বাসিন্দা জিতেন মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পর তারিখের পর তারিখ। শুনানির পর শুনানি। শুরু হয় রসিকের বন্দি দশা। মাঝে বেশ কয়েক বছর অবশ্য জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন। কিন্তু আবারও ঠাঁই হয় সেই সংশোধনাগারে। একটা সময় রসিকের স্থায়ী ঠিকানা হয়ে দাঁড়ায় মালদহ সংশোধনাগার। কারা আধিকারিকদের মতে, রসিকই রাজ্যের প্রবীণতম বন্দি।
ভারতীয় আইন অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর জেলবন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়। তবে রসিকের সঙ্গে এমনটা ঘটেনি। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বৃদ্ধের পুত্র-পৌত্রেরা। কখনও হাইকোর্ট, কখনও সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন তাঁরা। শেষমেশ গত ২৯ নভেম্বর ১০৪ বছরের রসিকের জামিন মঞ্জুর করে সর্বোচ্চ আদালত। মঙ্গলবার জামিনের কাগজ মালদহ জেলা সংশোধনাগারে পৌঁছয়। তারপর মুক্তি। সুরেশের ছেলে উত্তম মণ্ডল বলেন, “জমি-জায়গা নিয়ে ভাইয়ে ভাইয়ে ঝগড়া। আমার বাবাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল। জেল খাটার প্রায় আশি বছর হল। আমার বাবার বয়স একশো চার।”