মালদা: আবারও এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু। অভাবী সংসার। বাড়িতে বাবা, মা, বোন ও এক ভাই রয়েছে। বাবা বিশেষভাবে সক্ষম। বোনও তাই। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে বলতে ছিল ওই যুবকই। এলাকায় শ্রমিকের কাজ করে, খুব বেশি টাকা ঘরে আসত না। তাই একটু বেশি টাকা রোজগারের আশায়, বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে নেপালে গিয়েছিল কাজ করতে। দু’মাস আগেই পারি দিয়েছিল নেপালে। কিন্তু ফিরল কফিনে মুড়ে। মালদার ইংরেজবাজারের বাড়িতে আজই ফিরেছে মুকেশ সাঁইয়ের কফিনবন্দি দেহ।
নতুন বছরের শুরুতেই গোটা গ্রামে বিষাদের সুর। মুকেশের নিথর দেহ গ্রামে ঢুকতেই কান্নার রোল। ভেঙে পড়েছেন সন্তানহারা বাবা-মা। একটু বেশি রোজগারের আশায় ভিনদেশে পাড়ি দিয়ে ছেলে যে এভাবে তাঁদের ছেড়ে চলে যাবে, তা ভাবতেই পারছেন না বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রায় মাস দু’য়েক আগে নেপালে কাজে গিয়েছিল ওই যুবক। গত ৩১ ডিসেম্বর সেখানে একটি টাওয়ারে কাজ করতে উঠেছিল। সেই সময়েই ঘটে দুর্ঘটনা। টাওয়ারের উপর থেকে আচমকা নীচে পড়ে যান মুকেশ। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। আজ ইংরেজবাজারে ন’ঘরিয়ার খাস পাড়া এলাকায় তাঁৎ কফিনবন্দি দেহ ঢুকতেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা গ্রামে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও মালদার এই ইংরেজবাজার থানা এলাকা থেকেই ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল একাধিক পরিযায়ী শ্রমিকের। গত নভেম্বর মাসেই মহারাষ্ট্রে কাজ করতে যাওয়া মালদার দুই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল। এসবের মধ্যেই আবারও এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু ইংরেজবাজারে। মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের এক প্রতিবেশী বলছেন, “এখানে কাজ করে একটু কম টাকা পাওয়া যায়। তাই নেপালে গিয়েছিল কাজ করতে।” সরকার বা প্রশাসন যাতে সন্তানহারা, অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ায়, সেই আর্জি জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা।