মালদা: হাতের একটি আঙুলে চাপ দিলেই উঠে যাচ্ছে রাস্তা। রাস্তার অংশ হাতে নিয়ে মুঠো করে চাপ দিলেই খসে খসে পড়ছে পিচ। ঝরে পড়ছে কাঁকর। অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্যি। এই রাস্তা দিয়েই নাকি যাবে গাড়ি, হাঁটবেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু টিকবে তো? রাস্তার বেহাল অবস্থা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সদুত্তর নেই প্রশাসনের কাছেও।
মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে দেখা গেল এমনই ছবি। নিম্নমাণের সামগ্রী ব্যবহার করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, সেই সব সামগ্রী কেনা হয়েছে তৃণমূল নেতার কাছ থেকেই। শুধু তাই নয়, নিয়ম মেনে কাজের সময় নির্ধারণ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি! সাধারণ মানুষের ক্ষোভ দেখে রাস্তার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ছোটেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। জেলাশাসকের নির্দেশে তদন্ত শুরু করেছেন আধিকারিকরা। তদন্ত করে ব্লক প্রশাসন জেলা শাসকের কাছে রিপোর্ট পাঠাবে।
মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকায় শহিদ মোড় থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের কাজ হচ্ছে। এই রাস্তা এলাকার অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা। প্রচুর মানুষ যাতায়াত করেন। সেখানে দুই দফায় রাস্তা সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হয়েছে এক কোটি টাকা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, একেবারেই নিয়ম মেনে কাজ হচ্ছে না, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে দুর্নীতি করছে ঠিকাদার। এইভাবে কাজ চললে যে কোনও সময় রাস্তা নষ্ট হয়ে যাবে, এমনটাই আশঙ্কা এলাকাবাসীর। আরও অভিযোগ যে, কাজ হচ্ছে রাতের অন্ধকার, মানুষের চোখকে ফাঁকি দিয়ে দুর্নীতি করা যায়।
দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসতেই সোমবার জেলাশাসকের নির্দেশে কাজ খতিয়ে দেখতে যান প্রশাসনিক আধিকারিকরা। উপস্থিত ছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের যুগ্ম সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক মহম্মদ আলি রুমি। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল নেতা তথা এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কাজের সামগ্রী কেনা হয়। বালি থেকে শুরু করে যাবতীয় সামগ্রী কিনছেন ঠিকাদার। সেগুলি অত্যন্ত নিম্নমানের। বিজেপির জেলা সম্পাদক রূপেশ আগরওয়ালের আরও দাবি, এভাবেই কাটমানির টাকা যাচ্ছে তৃণমূল নেতার পকেটে। ফলে ব্যস্ততম রাস্তার কাজে দুর্নীতি হচ্ছে।
যদিও তৃণমূল অপপ্রচারের দায় চাপাচ্ছে বিজেপির ঘাড়ে। তৃণমূল আইএনটিটিইউসি ব্লক সভাপতি সাহেব দাসের দাবি, দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে প্রশাসন সেটা খতিয়ে দেখছে। বিজেপি উন্নয়নকে আটকানোর জন্য এই ধরনের অভিযোগ করছে। সমগ্র ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।