মালদহ: চিনা নাগরিক হানকে নিয়ে বাড়ছে ধোঁয়াশা। তাঁর শরীরে কোনও ইলেকট্রনিক ডিভাইজ বা চিপ লুকিয়ে থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। তাই তাঁর সিটি স্ক্যান করার ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে এখনও তাঁর ল্যাপটপ, মোবাইল আনলক করা যায়নি। কারণ, সেগুলি মান্দারিন ভাষায় লক করা।
যে বিশ্ববিদ্যালয়ে হানের পড়াশোনা, সেই বিশ্ববিদ্যালয় মলিকিউলার বায়োলজি, মাইক্রো বায়োলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষায় বিশেষ খ্যাত। তাহলে কি ভাইরাস সংক্রান্ত কোনও বিষয় হানের সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে পারে, ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের। অন্যদিকে কী ভাবে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করলেন চিনা নাগরিক হান জুনেই তা জানতে হানকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনার পুনর্নিমাণ করলেন তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, হানের ল্যাপটপ ও আইফোনের পাসওয়ার্ড ক্র্যাক করার জন্য মান্দারিন ভাষা জানা ব্যক্তির খোঁজ করছে পুলিশ। শরীরের ভিতরে কোনও ইলেকট্রনিক ডিভাইস রয়েছে কি না তা জানতে সিটি স্ক্যান করা হতে পারে হানের। হান কোনও সাধারণ ব্যক্তি নন বলেই মনে করছে পুলিশ। বড় কোনও মতলব নিয়েই ভারতে এসেছেন তিনি।
ধৃত এই চিনা নাগরিকের কথায় যথেষ্ট অসঙ্গতিও খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। কেবলমাত্র আর্থিক প্রতারণা নাকি হানের ভারতে আসার পিছনে রয়েছে আরও বড় কারণ? সেই রহস্য ভেদ করার চেষ্টা করছেন পুলিশ আধিকারিকরা। মঙ্গলবার তাঁকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করবেন জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া ও ডেপুটি পুলিশ সুপার প্রশান্ত দেবনাথ।
সম্প্রতি মালদহে ধরা পড়েন চিনের নাগরিক হান জুনেই (Han Zeune)। প্রথমে তিনি জানিয়েছিলেন বেড়াতে এসেছেন ভারতে। কিন্তু ক্রমেই জেরায় তাঁর বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য হাতে পান তদন্তকারীরা। তিনি লাল ফৌজের দেশের গুপ্তচর বলেই এখন মনে করছে তারা। ভারতের আর্থিক পরিকাঠামো ধ্বংস করাই ছিল হানের মূল লক্ষ্য। জেরায় উঠে আসা তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, ‘মাল্টি লেভেল মার্কেটিং’ এর নাম করে হান ও তাঁর সঙ্গী সান জিয়াং তথ্য পাচারের কাজ করতেন।
আরও পড়ুন: তৃতীয় ঢেউ থেকে শিশুদের রক্ষার্থে কতটা প্রস্তুত বাংলা সরকার?
পাওয়ার ব্যাঙ্ক ও ইভেন্ট প্ল্যান্ট বলে দু’টি অ্যাপও তৈরি করেছিলেন তাঁরা। টাকা দ্বিগুণ করিয়ে দেওয়ার নাম করে, সেই অ্যাপের মাধ্যমেই তাঁরা ভারতে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লগ্নি করাতেন। হানকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ১৩০০ ভারতীয় সিমকার্ড জাল তথ্য সহ নিজের স্ত্রী ও সঙ্গী সান জিয়াং-এর সাহায্যে চিনে পাচার করেন। অন্তর্বাসের আড়ালে সিম পাচার করতেন তিনি। সেই জাল সিম দিয়ে অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে অনলাইনেই টাকা হাতিয়ে নিতেন তাঁরা।