
মালদহ: মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গ্রেফতার মূল চক্রী। পুলিশের জালে ধরা পড়েছে মালদহেরই এক গৃহশিক্ষক। নাম জীবন দাস। জানা গিয়েছে, জীবন দাস গৃহ শিক্ষকতা ছাড়াও নিজের কোচিং সেন্টার চালাতেন। মালদহের মানিকচকের গোপালপুরের বালুটোলা থেকে গ্রেফতার করা হয় জীবন দাসকে। বালুটোলা গ্রামেই তাঁর বাড়ি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শনিবার ইংরেজি পরীক্ষার দিন এনায়েতপুর হাইস্কুল থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষনের সোশ্যাল মিডিয়ায় মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে প্রশ্নপত্র। তল্লাশি চালিয়ে সাত জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে সাতটি মোবাইল উদ্ধার হয়। মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়। সাত জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করা হয়। প্রত্যেকেই গোপালপুর হাইস্কুলের।
যে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ থেকে এই প্রশ্ন ফাঁস হয় বা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেই গ্রুপের অ্যাডমিন এই জীবন দাস। পুলিশ আপাতত জীবন দাসকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। তাঁদের জেরা করছে যাতে এই চক্রে আর কে বা কারা রয়েছে তা জানতে। কিন্তু তাঁর কাছে কীভাবে চলে আসতে পারে প্রশ্নপত্র, তবে কি এর পিছনে কোনও বড় মাথা কাজ করছে, সেই বিষয়টা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।
প্রসঙ্গত, দুর্নীতির আবহে যখন রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা প্রশ্নবাণে বিদ্ধ, তখন এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় অত্যন্ত কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করেছিল পর্ষদ। কিন্তু তার মধ্যেই মাধ্যমিকের প্রথম দিন প্রশ্ন পত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপে বেরিয়ে পড়ে একটি প্রশ্নপত্র। পরে দেখা যায়, আসল প্রশ্নপত্রের সঙ্গে অনেকটাই মিল রয়েছে প্রশ্নের। দেখা যায়, মালদহেরই দুটি স্কুল থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। যদিও তা ২৫ মিনিটের মধ্যেই ট্র্যাক করা গিয়েছিল বলে পর্ষদ জানিয়েছিল। মাধ্যমিকের দ্বিতীয় দিনেও সেই একই ঘটনা। এবারেও নাম জড়ায় মালদহেরই।
জানা যায়, মালদার মানিকচকের এনায়েতপুর হাইস্কুলে পরীক্ষা দিতে আসা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মাধ্যমেই এই দু’দিন প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। এনায়েত হাইস্কুলের হেডমাস্টার বদিউজ্জামাল জানান, ওই পরীক্ষার্থীর স্কুলে তিনি একটি হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপের কথা জানতে পেরেছিলেন। ‘MP 2024 QUESTION OUT’ এরকম নাম দিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছিল ওই পরীক্ষার্থীর মোবাইলে। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্যের সংখ্যা ১৫১ জন। সেই গ্রুপের সূত্র ধরেই এই গৃহশিক্ষকের হদিশ মেলে।