
মালদহ: অপারেশন করতে হবে। সেই কারণে ঝাঁ চকচকে একটি নার্সিংহোমে এক যুবককে ভর্তি করে রেখেছিল পরিবার। কিন্তু এ কী! ঘরের ছেলের সঙ্গে দেখাই করতে দিচ্ছে না নার্সিংহোম। কিন্তু কেন? পরবর্তীতে ‘চেপে’ ধরতেই জানা গেল আসল তথ্য।
তিনদিন ধরে মৃতদেহ নার্সিংহোমে ভর্তি রেখে চিকিৎসা। যুবকের মৃতদেহকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা করার নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠল মালদার কালিয়াচক থানার এক বেসরকারি নাসিংহোমে। অনলাইনে জেলা স্বাস্থ্যদফতরে অভিযোগের পরই বেসরকারি নাসিংহোমের এই কাণ্ডের পর্দা ফাঁস।
কী ঘটেছে?
বছর চব্বিশের যুবক সাকিরুল ইসলাম। পিত্ত থলিতে পাথরের চিকিৎসা করতে মালদা জেলার কালিয়াচক থানার সুজাপুরে ১২নং জাতীয় সড়কের ধারে এক ঝাঁ চকচকে বেসরকারি নাসিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। শুক্রবার তিনি ভর্তি হন। ওই নাসিংহোমের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাইক্রো সার্জারির মাধ্যমে পিত্ত থলি অপারেশন করার পরামর্শ দেন বলে দাবি রোগীর পরিজনদের। সেই পরামর্শে মানিকচক কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সাকিরুল শনিবার অস্ত্রোপচারে রাজি হন। শনিবার সন্ধেয় অস্ত্রোপচারও হয়। কিন্তু অপারেশন টেবিলেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ পরিবারের সদস্যদের।
তবুও, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ বিষয়টি লুকিয়ে রাখে বলে অভিযোগ। রোগীর পরিবারের দাবি, নার্সিংহোম নাকি জানিয়েছে, অপারেশনের পর সাকিরুল অচৈতন্য রয়েছে। তাই আইসিইউতে রাখা হয়েছে। এরপর আর পরিবারের সদস্যদের সাকিরুলের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। এমন কী চিকিৎসকও পরিবারের সদস্যদের জানান, সাকিরুল সুস্থ আছে। তিন দিন কেটে গেলেও নাসিংহোম কর্তৃপক্ষ সাকিরুলের সঙ্গে পরিবারের কোনও যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি।
এই অবস্থায় সাকিরুলের পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয়। অনলাইনে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে অভিযোগ জানান। এরপরই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা নাসিংহোমে তদন্তের জন্য যান। সেখানে গিয়ে স্বাস্থ্যদফতরের প্রতিনিধিরা জানতে পারেন সাকিরুলের মৃত্যু হয়েছে। তারপর পুরো বিষয়টি কালিয়াচক থানাতে অভিযোগ করে পরিবারের সদস্যরা। শুরু হয়েছে তদন্ত। সাকিরুলের মৃতদেহ পুলিশ উদ্ধার করে মঙ্গলবার মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। বিষয়টি নিয়ে নাসিংহোম কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। মৃতের ভাগ্না বলেন, “শরীরে পাথর হয়েছিল। অনলাইনে কাকু ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারপর কাগজপত্র রেডি হয়। শনিবার অপারেশন হয়। নার্সিংহোম থেকে খালি বলছে ও অনেক সুস্থ আছে। এদিকে দেখা করতে দিচ্ছে না। মৃত্যুর পরও ব্লাড টেস্ট।”