
মালদহ: চার বছর আগের খুনের মামলা। শনিবার তাতেই অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনাল মালদা জেলা আদালত। শুক্রবারই অভিযুক্ত মহম্মদ আসীফকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন বিচারক। সেই ভিত্তিতে শনিবার ছিল মামলার রায় শোনানোর পর্ব। তাতেই গোটা ঘটনাকে বীভৎস বলে আখ্যান দিয়ে দোষীকে ফাঁসির সাজা শোনায় আদালত।
তখন ২০২১ সালের জুন মাস। ঘটনা মালদহের কালিয়াচক থানার পুরাতন ১৬ মাইল এলাকার। পরিবারের চার সদস্যকে নির্মমভাবে খুন করে ওই পরিবারের ছোট ছেলে মহম্মদ আসীফ। ঘটনায় প্রাণ যায় আসীফের বাবা জাওয়াদ আলি, মা মাইরা বিবি, বোন আরিফা খাতুন ও ঠাকুরমা আলেকজান বেওয়ারের। নিজের পরিবারকেও কেউ এই ভাবে শেষ করে দিতে পারে? প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন একাংশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, আসীফের চালানো হত্যালীলা থেকে ভাগ্যের জোরে প্রাণ বেঁচে গিয়েছিল দাদা মহম্মদ আরিফের। প্রাণ বাঁচাতে এলাকাছাড়া হয়েছিল সে। তবে আসীফ যে বাড়ির মধ্য়েই এমন একটা কাণ্ড ঘটিয়েছে, তা কিন্তু টের পায়নি কেউই। বাবা-মাকে মেরে নবনির্মিত বাড়িতেই ঘাপটি মেরে বসে থাকত আসীফ। খুব বেশি বাইরে যাতায়াত করত না। ফলত টেরও পায় না কেউ। ফেব্রুয়ারি মাসে হত্যা। পুলিশ যখন গোটা ঘটনা জানতে পেরেছে তখন জুন মাস। আসীফদের বাড়ির গুদাম ঘরে ঢুকে চারটি পচা গলা দেহ উদ্ধার করে তারা। গ্রেফতার করা হয় আসীফকে। কিন্তু কী কারণে এমন কাণ্ড ঘটায় সে, তা আজও স্পষ্ট নয়।
এদিন আসীফের পক্ষে সওয়ালকারী আইনজীবী মহম্মদ নাসের আলি জানিয়েছেন, ‘আদালত ফাঁসির সাজা দিয়েছে। তবে এই রায়ের ভিত্তিতে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’
অন্যদিকে, আসীফের বিরুদ্ধে সওয়ালকারী সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন, ‘বাড়িতে সবাই ওকে খুব ভালবাসত। ওর নামেই সব সম্পত্তি ছিল। এমনকি, বাবা-মাকেও ও প্রতিশ্রুতি দেয় নিউটাউনে ফ্ল্যাট কেনার। তবে সেই সবই ভুয়ো। ঘটনার দিন, প্রথমে সবাইকে ঠান্ডা পানীয়ে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ায়। তারপর তাদের দেহগুলি কফিন বন্দি করে। তাতে জল ভরে দেয়। তবে একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী অর্থাৎ আসীফের দাদা জলের শব্দতেই ঘুম ভাঙে ও প্রাণ বাঁচিয়ে পালায়।’